বিদেশি নার্সদের দুরবস্থা
২৬ জুন ২০১৪মূলত স্পেন, গ্রিস, ইটালি বা পর্তুগালের মতো অর্থনৈতিক মন্দায় আক্রান্ত কিছু ইউরোপীয় দেশের সেবিকারাই জার্মানিতে এসে এমন বিপদে পড়ছেন৷ স্পেনের মারিয়া সানচেজ (ছদ্মনাম) তাঁদের একজন৷ এসেছিলেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে৷ নিজে ভালো থাকবেন, দেশে রেখে আসা প্রিয়জনদের জন্যও কিছু করবেন – তাঁর এই স্বপ্ন এখন ভেঙে চুরমার৷ ২৩ বছর বয়সি এই সেবিকা কাজ করেন এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে৷ বেতন হিসেবে যা পান তাতে চলে না বলে মারিয়া চান অন্য কোথাও চাকরি নিতে৷ কিন্তু নিয়োগের শর্তের মধ্যে লেখা রয়েছে, দু'বছরের আগে চাকরি ছাড়া চলবে না, ছাড়লে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৬ হাজার ৬০০ ইউরো দিতে হবে৷
এমন শর্তে বাঁধা পড়ে ন্যূনতম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে৷ কোথাও কোথাও ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ হাজার ইউরো দেয়ার কথাও লেখা হয়৷ ফলে একবার কাজে ঢুকলে কেউ আর অপেক্ষাকৃত ভালো চাকরিতে যোগ দিতে পারেন না৷ ফলে উন্নত জীবনের আশায় জার্মানিতে আগমন অনেকের জন্যই হয়ে যাচ্ছে দুরাশা৷
জার্মান ট্রেড ইউনিয়ন ‘ভ্যার্ডি'-র সেক্রেটারি কালে-কুঙ্কেল মনে করেন, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অস্বচ্ছ শর্তমালায় ভরপুর চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে বিদেশি সেবিকাদের এভাবে হয়রানির মুখে ফেলে প্রকারান্তরে জার্মানির সুনাম ক্ষুণ্ণ করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে বড় রকমের সমস্যা সৃষ্টির আশঙ্কাও তৈরি করছে৷ তিনি জানান, এ মুহূর্তে জার্মানিতে ৩০ হাজার দক্ষ সেবিকার পদ খালি রয়েছে৷ এ দশকের শেষ নাগাদ শূন্য পদের সংখ্যা ২ লক্ষ ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে৷ তাঁর মতে, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আসা সেবিকাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে ভবিষ্যতে জার্মানির স্বাস্থ্যখাতে চাকুরিতে আগ্রহী বিদেশির সংখ্যা কমে যেতে পারে৷