জার্মানিতে ভিডিও নজরদারি বিতর্ক
বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তার খাতিরে ভিডিও নজরদারি যন্ত্র ব্যবহার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী৷ জার্মানিতেও স্বল্পমাত্রায় চালু আছে এমন ব্যবস্থা৷ কিন্তু চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে কি যাবে না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ভিডিও নজরদারি
জার্মানির বিভিন্ন রেল স্টেশনে ভিডিও নজরদারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে অনেক দিন থেকেই৷ তবে তার পরিসর বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার৷ ২০২৪ সালের মধ্যে প্রধান সব রেল স্টেশনগুলোকে এই ধরনের নজরদারির আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ শুধু সিসি ক্যামেরা দিয়েই নয় তার সাথে চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও যোগ করতে চান তিনি৷
চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি
বার্লিনের সুডক্রয়েজ রেল স্টেশনে সম্প্রতি চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প শেষ হয়েছে৷ এই স্টেশন ব্যবহারকারী ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী এক বছরের জন্য তাদের চেহারা শনাক্ত করার অনুমতি দেয় সরকারকে৷
যেভাবে শনাক্ত করা হয়
প্রকল্পটি শুরুর আগে স্বেচ্ছাসেবীদের ছবি পুলিশের ডেটাবেজে দেয়া হয়েছে৷ ট্রেন স্টেশনে বসানো ক্যামেরা যখনই তাদের চিহ্নিত করে সেই তথ্য পুলিশের কাছে চলে যায়৷
কতটা সঠিক?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রযুক্তিটি ৮০ ভাগ সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছে৷ অর্থাৎ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি ৫ জনের চারজনকে শনাক্ত করতে পারছে সিস্টেমটি৷ অন্যদিকে এক হাজার জনে একজনকে ভুলভাবে শনাক্ত করেছে এই সফটওয়্যার৷
ভুলের মাশুল
প্রযুক্তিটির ভুলের সংখ্যা কম হলেও তা নিয়ে উদ্বেগ আছে৷ কেননা শতভাগ নির্ভুল না হলে যেকোন একজন নিরপরাধী ব্যক্তিও হয়রানির শিকার হতে পারে৷
আগ্রহী পুলিশ
জার্মানির পুলিশ চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে৷ ফেডারেল পুলিশ বিভাগের প্রধান ডিয়েটার রোমান মনে করেন, এর ফলে বিশেষ পুলিশি অভিযান ছাড়াই দ্রুত অপরাধীকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে, যা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় অর্জন হবে৷
আইনি বাধা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আগ্রহ থাকলেও জার্মানিতে এখনই চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার চালু করা সম্ভব না৷ কেননা এ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির ভিডিও নজরদারি ব্যবস্থা চালুর জন্য এখনও আইনী কাঠামো নেই দেশটিতে৷
আদালতের রায়
আইনি কাঠামো না থাকলেও আদালতের সাম্প্রতিক একটি রায় অবশ্য পুলিশের পক্ষে গেছে৷ গত বুধবার হামবুর্গের প্রশাসনিক আদালত ২০১৭ সালে জি টুয়েন্টি সম্মেলনের বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের ছবির বিতর্কিত তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছে পুলিশকে৷ স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেহারা শনাক্তকরণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে ঐ ঘটনায় সহিংসতায় জড়িতদের চিহ্নিত করে৷
উদ্বেগও আছে
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন নেতারা এ ধরনের প্রযুক্তির পক্ষে যেমন আছেন তেমনি বিপক্ষে থাকা রাজনীতিবিদের সংখ্যাও কম নয়৷ পুলিশ ও গোয়ান্দা বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট ছবি অনুসন্ধানের বিষয়ে গত জুলাইতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বেসরকারি সংগঠন সোসাইটি ফর সিভিল রাইটস৷