জার্মানিতে মজুরি বৈষম্য: নারীর গড় আয় ১৮% কম
১৯ জানুয়ারি ২০২৪বৃহস্পতিবার জার্মানির ফেডারেল স্ট্যাটিসটিক্স অফিস প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর জার্মানির নারীরা প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২০ দশমিক ৮৪ ইউরো এবং পুরুষরা গড়ে ২৫ দশমিক ৩ ইউরো আয় করেছেন।
পরিসংখ্যানবিদরা লিঙ্গের ভিত্তিতে বেতনের পার্থক্য হিসাব করেছেন- যা পুরুষ ও নারীদের মধ্যে গড় মোট আয়ের পার্থক্য দেখিয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে এ হিসাব করা হচ্ছে এবং সে বছর পার্থক্য ছিল ২৩ শতাংশ।
তারপর সেই পার্থক্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং ২০২০ সালে ১৮ শতাংশে নামে। পরের কয়েক বছরে আর কোনো পরিবর্তন হয়নি।
অবশ্য জার্মানিতে এলাকা ভিত্তিতে এই পার্থক্য সমান নয়। পশ্চিম জার্মানিতে গড় মোট আয়ে পার্থক্য ১৯ শতাংশ। তবে সাবেক কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির রাজ্যগুলোতে এই পার্থক্য বেশ কম, মাত্র ৭ শতাংশ।
পার্থক্যের কারণ
ফেডারেল স্ট্যাটিসটিক্স অফিস এই পার্থক্যের কয়েকটি কারণ সামনে এনেছে যার একটি, ৩০ বছরের পর নারীদের উপার্জন স্থবির হতে শুরু করা। জার্মানিতে নারীরা সাধারণত গড়ে এই বয়সে নিজেদের প্রথম সন্তানের জন্ম দেয়।
"এমনটা হতে পারে, কারণ, নারীদের কর্মজীবনে পারিবারিক কারণে বার বার তাদের ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত হয় এবং তারা খণ্ডকালীন কাজ বেছে নেন।”
শিশুদের যত্ন এবং পারিবারিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমনটা হয় বলে সংস্থাটি মনে করে। এ কারণে নারীদের ক্যারিয়ারের অগ্রগতি এবং বেতন বৃদ্ধি আর তেমন একটা হয় না।
তবে কোনো নারী এবং পুরুষ একই কর্মঘণ্টা কাজ করেছেন, একই যোগ্যতা নিয়ে এবং একই ধরনের কাজে- এমন ক্ষেত্রেও নারীরা গড়ে পুরুষদের চেয়ে কম উপার্জন করেন। তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য কম, ৬ শতাংশ।
মজুরিতে বৈষম্য শুধু জার্মানিতে নয়
নারী-পুরুষ মজুরিতে এই বৈষম্য শুধু জার্মানিতেই নয়, বরং পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জুড়েই এই পার্থক্য বিদ্যমান।
ইউরোপিয়ান কমিশনের তথ্যানুযায়ী, পুরো ইইউ জুড়ে একই কাজের ক্ষেত্রে একজন পুরুষের তুলনায় একজন নারীকে গড়ে ১৩ শতাংশ কম মজুরি দেওয়া হয়।
আর এই পার্থক্য মুছে ফেলার গতিও অত্যন্ত ধীর।
২০২০ সালের মার্চে ইউরোপিয়ান কমিশন, ২০২৫ সালের মধ্যে বেতনে এই বৈষম্য মুছে ফেলতে একটি পথরেখা ঠিক করে। ২০২৩ সালের জুনে ‘পে ট্রান্সপারেন্সি ডিরেক্টিভ' প্রকাশ করা হয়। লক্ষ্য হলো শ্রমিকদের জন্য তারা মজুরিতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন কিনা তা নির্ধারণ করতে পারা বা নিয়োগকর্তাদের জন্য তারা সমান বেতনের নীতি প্রয়োগ করছেন তা নিশ্চিত করা সম্ভব করে তোলা।
এসএনএল (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি