1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে শরণার্থী নির্যাতনের বিচার

৯ নভেম্বর ২০১৮

চার বছর আগে খবরে উঠে এসেছিল জার্মানিতে একটি আশ্রয় কেন্দ্রে শরণার্থী নিপীড়নের ঘটনা৷ কারারক্ষী, সমাজকর্মীসহ মোট ৩০ জনের অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা এখন আদালতে ওঠার অপেক্ষায়৷

https://p.dw.com/p/37xhi
ছবি: picture alliance / dpa

জার্মানির বুর্বাখের শহরের একটি আশ্রয় কেন্দ্রে চার বছর আগে শরণার্থী নিপীড়নের একটি ঘটনা ঘটে৷ ঘটনাটি তখন খবরের শিরোনামে উঠে এলেও, গত সপ্তাহে এই ঘটনার সম্পূর্ণ অভিযোগপত্র প্রকাশ করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী, ক্রিস্টিয়ান কুহলি৷ সিগেন শহরের একটি সভায় ১৫৫ পাতার এই দীর্ঘ অভিযোগপত্রটি সাধারণ জনতার সামনে পাঠ করা হলে ঘটনার ভয়াবহতা নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে৷

নয় মাস ধরে শরণার্থীদের সাথে আশ্রয় কেন্দ্রের কর্মীরা যেভাবে অত্যাচার করতেন, তার বিস্তারিত বিবরণ এই অভিযোগপত্রে পাওয়া যায়৷ শরণার্থীদের নিপীড়নে কেন্দ্রটির রক্ষী, পরিচালক ও সমাজকর্মীদের জড়িত থাকার কথা এই অভিযোগপত্রে আছে৷

শুধু এই দীর্ঘ পত্রই নয়, শরণার্থীদের সাথে ঘটা অন্যায়ের প্রমাণ হিসাবে রয়েছে কিছু ছবি ও ভিডিও৷ এমনই একটি ছবিতে দেখা গেছে হাতকড়া পরা অচেতন এক শরণার্থীকে৷ তাঁর গলা পা দিয়ে চেপে আছেন আশ্রয়কেন্দ্রের এক প্রহরী৷ আরেকটি ভিডিওতে এক শরণার্থীকে নোংরা তোশকে জোর করে শোয়াতে দেখা যায়৷

ছবি বা ভিডিওতে দেখা যাওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে একজন পুলিশকর্মী রয়েছেন৷ ছবিগুলি তোলার আগে শরণার্থীকে মেরে অচেতন করে ফেলার কাজটি তিনিই করেন বলে জানা গেছে৷

এই ছবিগুলি দেখে পাশের শহর, হাগেনের পুলিশপ্রধান ফ্রাঙ্ক রিখটার এই পরিস্থিতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘গুয়ান্তানামো বে’-র সাথে তুলনা করেন৷

আশ্রয় কেন্দ্রের রক্ষীরা বেশ কয়েকদিন ধরে শরণার্থীদের একটি ‘প্রবলেম রুম’-এ বন্দি করে প্রবল মারধর করতেন৷ কুহলির বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, এই মারের কারণ  হতো লুকিয়ে ধূমপান করার মতো তুচ্ছ কোনো ‘অপরাধ’৷

জেনে শুনেও চুপ!

এই আশ্রয় কেন্দ্রটি চালানো হতো ‘ইউরোপিয়ান হোম কেয়ার’ সংস্থার তত্ত্বাবধানে৷ এই সংস্থার এক কর্মচারীও শরণার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহারের সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে৷ সেই ব্যক্তির নির্দেশেই ঠিক হতো কোন শরণার্থীকে নিয়ে যাওয়া হবে ‘প্রবলেম রুম'-এ৷ এবং বিনা প্রতিবাদে তার সব আদেশ মেনে অত্যাচার চালিয়ে যেতেন আশ্রয় কেন্দ্রের আরেক সমাজকর্মীও৷

আর্ন্সবের্গ শহরের দুই পৌরসভা সদস্যের দিকেও উঠেছে অভিযোগের আঙুল৷ কুহলির বয়ান থেকে জানা যায় যে, এই দুজনের ঘর কুখ্যাত ‘প্রবলেম রুম’-এর ঠিক পাশে ছিল৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘শরণার্থীদের সাথে এমন অপরাধের কথা জানা সত্ত্বেও এ বিষয়ে তারা কিছু করেননি৷''

সমস্ত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের দায়ী করা হবে শারীরিক নির্যাতন, স্বাধীনতা হরণ, নিগ্রহ ও চুরির মতো একাধিক অপরাধে৷ শাস্তি হিসাবে তারা পেতে পারেন বড় অঙ্কের জরিমানা বা কারাদণ্ডও৷

২০১৯ সালের গোড়ায় নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার আদালতে শুরু হবে এই মামলার বিচারকার্য৷

আশ্রয় কেন্দ্রে শরণার্থী নিপীড়নের খবর সামনে আসার পর থেকেই সেখানের সমস্ত কার্যকলাপ জার্মান রেড ক্রস-এ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷

এসএস/এসিবি (এএফপি/ইপিডি)

২০১৬ সালের ছবিঘরটি দেখুন...