জার্মানিতে স্বীকৃতির পথে ইসলাম
২৯ জানুয়ারি ২০১৩ব্রেমেন রাজ্যের সঙ্গে এই চুক্তিকে কার্যত ঐতিহাসিক মনে করছেন ইরোল প্যুর্লু৷ জার্মান মুসলিম কোর্ডিনেশন কাউন্সিলের এই মুখপাত্র চুক্তির দিনটিকে আখ্যা দিলেন ‘আনন্দের দিন' হিসেবে৷
বর্তমানে জার্মানিতে তিনটি ইসলামী সংগঠনকে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ প্যুর্লু বলেন, ‘‘এর ফলে একটি পরিষ্কার বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে৷ আর তা হচ্ছে, ইসলাম জার্মানির অংশ৷''
ইসলামি সংগঠনকে এ ধরনের স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্রেমেনের অবস্থান তৃতীয়৷ এর আগে গত নভেম্বরে হামবুর্গ একটি সংগঠনের সঙ্গে এরকম একটি চুক্তি করে৷ এরপর ডিসেম্বর মাসে হেসে রাজ্য দুটি ইসলামি সংগঠনকে এরকম স্বীকৃতি দিয়ে সেখানকার বিদ্যালয়ে ধর্মীয় ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেয়৷
এখানে বলা প্রয়োজন, জার্মানির বিভিন্ন রাজ্য এবং মুসলিম সংগঠনগুলোর মধ্যে সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে ছিল৷ ২০১০ সালে এক্ষেত্রে পরিবর্তন আসে৷ আর এই পরিবর্তনে বড় ভূমিকা পালন করে ইসলামি সংগঠন ডিআইটিআইবি এবং ভিআইকেজেড৷ তারা নিজেদের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরেই প্রচারণা চালাচ্ছে৷
ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতির ফলে কি সুবিধা হবে, সেটা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে৷ অন্যান্য সুবিধা ছাড়াও এই কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষা প্রদান করতে পারবে৷ এতদিন রাজ্য কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে আসছিল৷ স্বীকৃতির ফলে সেই বাধা দূর হচ্ছে৷ এছাড়া, ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন উপলক্ষ্যে ছুটি গ্রহণের সুযোগ তৈরি হচ্ছে এই স্বীকৃতির ফলে৷ তার মানে হচ্ছে, মুসলিম স্কুল শিক্ষার্থী এবং চাকুরিজীবীরা ঈদ বা এ রকম ধর্মীয় উৎসবে ছুটি নিতে পারবে৷
স্বীকৃতির ফলে কারাগারে, হাসপাতালে কিংবা অন্যান্য সরকারি সংস্থায় মুসলমানদের খোঁজখবর নেওয়ার সুযোগ পাবে ইসলামি সংগঠনগুলো৷ পাশাপাশি আইনি কাঠামোর ভেতরে থেকে মসজিদ নির্মাণ এবং মৃতকে ইসলামি পদ্ধতিতে দাফন, মানে কফিন ছাড়া শুধু কাফনের কাপড় পরিয়ে শুইয়ে দেওয়ার অনুমতিও পাবে মুসলমানরা৷ আপাতত হামবুর্গ, হেসে এবং ব্রেমেনের ক্ষেত্রে এসব নিয়মনীতি প্রযোজ্য হবে৷