1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বিশ লাখ শিশু দরিদ্র!

ভেরা ক্যার্ন/এআই১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

জার্মানি ক্রমশ আর্থিকভাবে সমৃদ্ধশালী হলেও দেশটিতে শিশু দরিদ্রতা বাড়ছে, সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে এ তথ্য৷ এ জন্য সরকারের পারিবারিক নীতিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা৷

https://p.dw.com/p/1K0Ve
শিশুর হাতে খালি প্লেট
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Kalaene

মানুষের সর্বনিম্ন প্রাত্যহিক চাহিদাগুলো মেটাতে জার্মানিতে কোনো ঘাটতি নেই৷ খাদ্য, আবাস, শীতের পোশাক, ওষুধ এবং স্কুল – সবার জন্যই সহজলভ্য৷ এমনকি বাভেরিয়া বা বার্লিনের দরিদ্র শিশুরা বিশ্বের দুশ' কোটি শিশুর অধিকাংশের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে৷

তা সত্ত্বেও, ব্যার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, দরিদ্রতার মধ্যে বড় হওয়া শিশুর সংখ্যা জার্মানিতে ক্রমশ বাড়ছে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় বিশ লাখ শিশুর অভিভাবকরা রাষ্ট্রের সাধারণ সহায়তা, যা ‘‘হার্টৎস-ফিয়ার' নামে পরিচিত, নিয়ে জীবনযাপন করছেন৷ তাদের জার্মানিতে গরিব হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ দীর্ঘমেয়াদি গবেষণাটিতে গবেষকরা রাষ্ট্রীয় কর্মসংস্থান ব্যুরোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে শিশুদের উপর দরিদ্রতার প্রভাব কী, তা নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন৷

টাটকা খাবারদাবার নিয়মিত খেতে না পারায় গরিব ঘরের শিশুদের মধ্যে পুষ্টির অভাব দেখা যাচ্ছে এবং তারা নানারকম অসুখের শিকার হওয়ার শঙ্কার মধ্যে রয়েছে৷ গবেষণায় আরো দেখা গেছে, দরিদ্রতার শিকার পরিবারের শিশুরা সমাজ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ কেননা অভিভাবকরা তাদের স্কুলের প্রমোদভ্রমণে কিংবা খেলাধুলায় বা সংগীত কোর্সে পাঠাতে পারেন না৷ দরিদ্র শিশুদের নিজস্ব বেডরুম বা অনেকক্ষেত্রে বাসায় হোমওয়ার্ক করার নিরিবিলি জায়গাও থাকে না৷

জার্মানিতে অসাম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
বিশ্বের পঞ্চম সমৃদ্ধতম দেশেও দারিদ্র্য আছে...ছবি: picture-alliance/dpa/C. Schmidt

এ সব কারণে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা লেখাপড়ায় ভালো করতে পারে না৷ ব্যার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের পারিবারিক নীতি বিষয়ক কর্মকর্তা আনেটা স্টাইন এই বিষয়ে বলেন, ‘‘নিরাপদ রোজগার আছে এমন পরিবারের সন্তানদের চেয়ে দরিদ্র শিশুদের শিক্ষাজীবনে বেশি সমস্যা দেখা যায়৷''

তবে এর অর্থ এই নয় যে, দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুরা সবসময় দরিদ্র থাকে৷ বরং নিম্নআয়ের পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের জন্য যতটা সম্ভব করার চেষ্টা করেন৷ এর পরেও অবশ্য দরিদ্রতার চিহ্ন থেকে যায়৷ স্টাইন বলেন, ‘‘শিশুরা যত বেশি দরিদ্রতার মধ্যে থাকে, ততবেশি নেতিবাচক বিষয়াদি দিয়ে প্রভাবিত হয়৷''

গবেষণায় আরো দেখা গেছে, একক অভিভাবকের সঙ্গে দুই বা ততোধিক ভাইবোন আছে এমন শিশুদের মধ্যে দরিদ্রতার হার অপেক্ষাকৃত বেশি৷

ফলে শিশুরা কোথায় বেড়ে উঠছে তার উপরে তাদের ভবিষ্যৎ প্রভাব বিস্তার করে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, জার্মানির ধনী রাজ্যগুলোর শিশুদের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল রাজ্যগুলোর শিশুদের তুলনায় দরিদ্রতার হার কম৷ জার্মানির পূর্বাঞ্চলে যেখানে প্রতি পাঁচটি শিশুর একটি দরিদ্র, সেখানে বাভেরিয়ায় প্রতি দশটি শিশুর একটি দরিদ্রতার শিকার৷

শিশুদের এই অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করেছেন স্টাইন৷ তিনি জানান, পারিবারিক নীতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে এবং কিছু উদ্যোগও নেয়া হয়েছে৷ কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না৷ তাঁর মতে, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কিভাবে সামাজিক কল্যাণভাতার রেট হিসেব করা হচ্ছে৷ বর্তমানে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য রেট শিশুদের জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে, বলেন তিনি৷ স্টাইন মনে করেন, শিশুদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় এনে সেই অনুযায়ী তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে হবে৷ শুধু স্কুলিং নয়, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে৷

উল্লেখ্য, শিশু দরিদ্রতা জার্মানিতে নতুন নয়৷ কিন্তু ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এটা রোধে সরকারি উদ্যোগগুলোর কোনোটাই পর্যাপ্ত নয়৷ বিষয়টি বিবেচনায় এনে জার্মানির অর্থমন্ত্রী ভল্ফগাং শয়েবলে গতসপ্তাহে শিশুদের জন্য সহায়তায় মাসে দুই ইউরো বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন৷ বলাবাহুল্য, অর্থমন্ত্রীর এই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন অনেকে, কেননা তারা মনে করেন মাত্র দুই ইউরো বাড়ালে কোনো কিছুই বদলাবে না৷

জার্মানির মতো একটি উন্নত দেশে ২০ লক্ষ শিশু দারিদ্রতাক শিকার, বিশ্বাস হয়? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য