জার্মানির রাজধানীতে বাংলা ‘পাঠশালা’
১২ জানুয়ারি ২০১১টোল কিংবা মক্তব নয়, নাম পাঠশালা৷ এই নামকরণে মানসমুকুরে ভেসে ওঠে খোলা একচালা ঘরে বেত হাতে গুরুমশায়৷ পড়ুয়ারা চুপ৷ রা নেই মুখে৷ গুরুবচনই একমাত্র শিরোধার্য৷ বার্লিনের বাংলা পাঠশালা বদ্ধ ঘরে৷ দশতলা বিল্ডিঙের দোতলায়৷ তাও আবার বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি বড় কক্ষে৷ গুরুমহাশয়া দুইজন৷ একজন ঢাকার৷ একজন কলকাতার৷ হাতে বেত নেই৷ মুখে মিষ্টি-মিষ্টি সোহাগি কথা৷ চোখ রাঙায় না৷ বরং, আদর মাখিয়ে বলে, এই তো, ঠিক বলছো, ঠিক লিখছো৷ দুই গুরুমহাশয়া বেতন নেন না৷ বিনা বেতনে পড়ান৷ স্কুলের নাম বাংলা পাঠশালা৷ ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা আপাতত বাইশ৷ বয়স ৮ থেকে ৩০৷ এদের পিতামাতা বাঙালি, কিংবা বাবা বাঙালি, মা জার্মান, ভিনদেশি৷ খাঁটি জার্মানও আছে৷ স্কুল প্রতি শনিবারে৷ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত৷
বাংলা পাঠশালা মূলত বাংলাদেশ দূতাবাসের পৃষ্ঠপোষকতায়, মোস্তফা কামাল এবং মিজানুর হক খান সহ জার্মানিতে বসবাসরত অন্যান্য বাঙালীদের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ বাংলাদেশের মোস্তফা কামাল এখন জার্মান নাগরিক৷ তিনি বড় ব্যাঙ্কার৷ আর বর্তমানে বাংলা পাঠশালার সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস, বার্লিন৷
বাংলা পাঠশালার খোলা হয় ২০১০ সনের ১৬ ডিসেম্বরে, বাংলাদেশের বিজয় দিবসে৷ ছাত্রছাত্রী বললো, আমরা কেবল ভাষাই শিখছি না, আমাদের দেশের সংস্কৃতি কী, তাও শেখানো হচ্ছে৷ ছবিতেও দেখানো হচ্ছে দেশের মানুষ, নদ-বন-প্রকৃতি৷ বাংলা পাঠশালায় বাংলা শিখছি আনন্দে৷ মনের গরজে৷
প্রতিবেদন: দাউদ হায়দার, বার্লিন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ