1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির স্কুলে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড

সঞ্জীব বর্মন১১ মার্চ ২০০৯

বুধবার সকালে জার্মানির দক্ষিণে ছোট একটি শহরে প্রথমে একটি স্কুলে এবং তারপর স্কুলের বাইরেও আততায়ীর গুলিতে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছে৷ পুলিশ অবশ্য শেষ পর্যন্ত গুলি চালিয়ে আততায়ীকেও হত্যা করে৷

https://p.dw.com/p/HA1U
স্কুলের সামনে পুলিশছবি: AP

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা রাজ্যে একটি স্কুলে মঙ্গলবার এমন ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই জার্মানিতেও এধরণের কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে, তা কেউ ভাবতেই পারে নি৷ অ্যালাবামায় এক ৩০ বছর বয়স্ক আততায়ী ১০ জনকে হত্যা করে তারপর আত্মহত্যা করে৷

জার্মানির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্টুটগার্ট শহরের কাছে ভিনেনডেন শহরের এক স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র স্থানীয় সময় সকাল পৌনে দশটা নাগাদ স্কুলে ঢুকে পড়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে প্রথমে ৯ জন ছাত্রছাত্রী ও ৩ জন শিক্ষককে হত্যা করে৷ আহত হয় আরও কয়েকজন৷ তারপর ঐ তরুণ একটি গাড়ি ছিনতাই করে সেটি চালিয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে ভেন্ডলিঙেন শহরে পালিয়ে যায়৷ পালাবার সময়ে সে এক পথচারীকেও হত্যা করে৷ ভেন্ডলিঙেন শহরে পৌঁছনোর পর পুলিশ তাকে থামানোর চেষ্টা করে৷ পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলি সময় সে আরও ২ ব্যক্তিকে হত্যা করে৷ অবশেষে পুলিশের গুলিতে আততায়ীর মৃত্যু হয়৷ প্রায় ১,০০০ পুলিশ ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনীর সদস্য আততায়ীকে ধরতে এবং আরও প্রাণ বাঁচাতে বিশাল এক অভিযানে অংশ নিয়েছিল৷ তারা স্কুলের প্রায় ৫৮০ জন ছাত্রকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে গোটা এলাকা খালি করে দিয়েছিল৷

আততায়ীর পরিচয়

ভিনেনডেন শহরের কাছে ভাইলার সুম স্টাইন শহরে ১৭ বছর বয়স্ক ঐ তরুণ বসবাস করত৷ তার প্রথম নাম টিম৷ গত বছর, অর্থাৎ ২০০৮ সালে ঐ তরুণ স্কুলের পাঠ শেষ করে পেশাগত প্রশিক্ষণ শুরু করে৷ বাড়িতে তার বাবার কাছে বেশ কয়েকটি বন্দুক ছিল৷ তার মধ্যে একটি এখন বেপাত্তা৷ স্কুলে তার পরিচিতদের মতে, ঐ তরুণের মধ্যে কোনোদিন কোনো অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে নি৷ সে আজ কেন এমন হত্যাকাণ্ড চালালো, তার কোনো উত্তর এখনো জানা যায় নি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অ্যালাবামা রাজ্যের আততায়ী নিজের চাকরি হারিয়ে ক্রোধের বশে এমনটা করেছিল বলে জানা গেলেও জার্মানির ঐ তরুণের কোনো সমস্যার কথা কারো জানা নেই৷

Amoklauf in Winnenden Baden Wuerttemberg
খবর শুনে চলে আসেন বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গ্যুন্টার ও্যটিঙার (বাম থেকে দ্বিতীয়)ছবি: AP

জোরালো প্রতিক্রিয়া

বলাই বাহুল্য, গোটা দেশ এই ঘটনার কথা শুনে শোকে বিস্ময়ে মুহ্যমান৷ দলমতনির্বিশেষে সব নেতাই কড়া ভাষায় এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন৷ প্রেসিডেন্ট হর্স্ট ক্যোলার নিহতদের পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন৷ চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার সহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতা বক্তব্য রেখেছেন৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জোসে মানুয়েল বারাসো এই অর্থহীন হিংসার নিন্দা করেছেন৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাংসদেরা নিহতদের স্মরণ করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন৷

হিংসার প্রবণতা

জার্মানিতে এই ধরণের হিংসাত্মক ঘটনা বিরল হলেও ইদানিংকালে – বিশেষ করে স্কুলের মধ্যে এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে৷ ২০০২ সালের ২৬শে এপ্রিল পূবের এয়ারফুর্ট শহরে এক স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ১৫ জনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা করে৷ জার্মানির পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এমন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মার মধ্যে কাঠামোগত সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ উদ্দেশ্য, কিশোর-কিশোরীদের ক্ষোভ দানা বাঁধার আগেই তা চিহ্নিত করে যৌথভাবে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা৷ বাম দলের এক সাংসদ ব্যক্তিগত সংগ্রহে যে অস্ত্র রয়েছে, তা এক কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে নথিভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন৷