জাল সিডি'র করুণ শিকার তারকা শিল্পীরা
১৮ নভেম্বর ২০১০বাংলাদেশের পপ সম্রাট আযম খান৷ যাঁর রয়েছে অসংখ্য ভক্ত৷ তাঁর চল্লিশ বছরের বেশি সময়ের পেশাগত জীবনে রয়েছে ডজন ডজন হিট গান৷ কিন্তু অবাধে গান পাইরেসির কারণে তিনি আজ নি:স্ব৷ একষট্টি বছর বয়েসি এই গায়ক মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত৷ চিকিৎসার জন্য এবছর তাঁকে হাত পাততে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভক্তদের কাছেও৷
রাজধানী ঢাকায় তাঁর দুই কামরার বাড়িটিতে তিনি আজ শয্যাশায়ী৷ সেখানে বার্তা সংস্থা এএফপি'কে তিনি বলেন, ‘‘গায়ক হিসেবে আমার পেশাগত জীবনে বাজারে আমার সতেরোটি অ্যালবাম রয়েছে, যেগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে৷ কিন্তু তার জন্য আমি পেয়েছি সাত লাখেরও কম টাকা৷'' তিনি বলেন, ‘‘আমার হিট অ্যালবামগুলো যদি ইউরোপে বের হতো তাহলে আমি এতোদিন জেট বিমানের মালিক হয়ে যেতাম৷ কিন্তু আমার এমন অবস্থা, যে বাংলাদেশের রিকশা চালকরাও আমাকে ভালোবেসে করুণা করে৷ অনেক সময় ভাড়া নেয়না৷''
বিশ্বব্যাপী গানের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অবৈধভাবে গান প্রকাশনার ঘটনা৷ আর এসব ঘটনার করুণ শিকার প্রতিভাবান শিল্পীরাও৷ আযম খান যার জ্বলন্ত উদাহরণ৷ এশিয়ায় এই পাইরেসি একটা বড় সমস্যা৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু কিছু জায়গায় এটা বেশি হচ্ছে৷ বিশেষ করে যেখানে ক্রেতাদের গানের সিডি কেনা বা কোনো গান বৈধভাবে ডাউনলোড করার সুযোগের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেখানেই পাইরেসির ঘটনা বেশি ঘটছে৷
একই অবস্থা বাংলাদেশের বাজারেও৷ সেখানে গানের সেরা অ্যালবাম লাখ লাখ কপি বিক্রি হয়৷ অথচ বৈধ পথে সিডি কেনার সুযোগ ক্রেতাদের খুবই কম৷ উল্টোদিকে অবৈধভাবে যারা গান বাজারে ছাড়ছে, তাদের কাছ থেকে সিডি কিংবা ক্যাসেট কেনার সুযোগ অবারিত৷ সংগীত শিল্পী এবং বাংলাদেশের সংগীত শিল্প মালিক সংস্থার প্রধান কুমার বিশ্বজিৎ এ বিষয়ে বলেন, ‘‘মাঝেমাঝে বৈধ কপিটি পাওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়৷ বাজারে কেবল পাইরেটেড ডিস্কটিই পাওযা যায়৷''
পাইরেসি এখন শুধু সংগীত শিল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়৷ ২০০৯ সালে ‘দ্য বিজনেস সফটওয়্যার অ্যালায়েন্স'র তালিকায় বলা হয়েছে, এশিয়ার যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি সফটওয়্যার পইরেসি হয়, বাংলাদেশ তাদের অন্যতম৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক