জায়গা অনুযায়ী ওজন বদল হয়!
২ মে ২০১৯বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গেলে আমাদের ওজন বদলে যায় কেন? মাধ্যাকর্ষণ শক্তি চুম্বকের মতো আমাদের পৃথিবীর বুকে ধরে রাখে৷ আমাদের ওজনের ক্ষেত্রে এই শক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷
দেখলে নিখুঁত মনে হলেও আমাদের নীল গ্রহটি কিন্তু বাস্তবে পুরোপুরি গোল নয়৷ পৃথিবীর উপাদানগুলিও ভূ-পৃষ্ঠ ও মাটির নীচে সমানভাবে বিভক্ত নয়৷ যেখানে উপাদানগুলির ঘনত্ব বেশি, সেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির তীব্রতাও অন্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি৷
স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পৃথিবীতে পদার্থের বণ্টন অত্যন্ত নিপুণভাবে পরিমাপ করা যায় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানের পার্থক্যও দৃশ্যমান করে তোলা যায়৷ তার ফলে দেখা যাচ্ছে, যে পৃথিবীর বুকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ক্ষেত্র ঠিক নিখুঁত গোলকের মতো নয়, বরং তার আকার অনেকটা আলুর মতো৷ উপত্যকার তুলনায় উঁচু জায়গাগুলিতে তার টান বেশি৷ স্যাটেলাইট দক্ষিণ ভারতে সবচেয়ে গভীর গর্ত খুঁজে পেয়েছে৷
পেটারের স্বাভাবিক ওজন যদি ৮০ কিলোগ্রাম হয়, সেখানে গেলে দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দৌলতে তার ওজন ২৪ গ্রাম কমে যাবে৷
পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল থেকে দূরত্ব অনুযায়ীও মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে হেরফের ঘটে৷ তাই সমুদ্র সৈকতের নীচু জমিতে দাঁড়ালে পেটারের ওজন সামান্য কমে যায়৷ কয়েক হাজার মিটার উঁচু পাহাড়ে গেলে ওজন আবার বেড়ে যায়৷ তবে পেটার এত সূক্ষ্ম পার্থক্য টের পায় না৷
গতিও ওজনের উপর প্রভাব ফেলে৷ নাগরদোলায় চাপলে আমাদের সেই অনুভূতি হয়৷ নাগরদোলা যত দ্রুত ঘোরে, আমরা তত বেশি বাতাসে ভাসতে থাকি৷ অপকেন্দ্র তখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করে৷
বিষুবরেখা পৃথিবী বাকি অংশের তুলনায় আরও দ্রুত আবর্তিত হয়৷ অপকেন্দ্র বলের কারণে সেখানে পোল্যান্ডের তুলনায় পেটারের ওজন ৪০০ গ্রাম কমে যায়৷
মহাকাশে এমন পার্থক্য পৃথিবীর তুলনায় অনেক বেশি৷ চাঁদে গেলে পেটার লাফ মেরে বিশাল দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে৷ সেখানে তার ওজন পৃথিবীর তুলনায় এক ষষ্ঠমাংশ হয়ে যায়৷ আবার জুপিটারের মতো বিশাল গ্রহে গেলে পেটারের ওজন পৃথিবীর তুলনায় আড়াই গুণ বেড়ে যায়৷
ইয়ুলিয়ান রসো/এসবি