জিএসজি ৯: জার্মানির সন্ত্রাসরোধী বিশেষ বাহিনী
সন্ত্রাসের ঝুঁকি বাড়ার কারণে ১৯৭২ সালে মিউনিখে এক ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হত্যাকাণ্ডের পর জিএসজি-৯ গঠন করা হয়৷
‘সীমান্ত সুরক্ষা গোষ্ঠী ৯’
১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিক চলাকালীন ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্ত করতে ব্যর্থ হয় জার্মান পুলিশ৷ তখন এই বিশেষ কমান্ডো পুলিশ বাহিনী সৃষ্টির পরিকল্পনা নেওয়া হয় – যদিও তা অনেককে নাৎসি আমলের বাছাই এসএস বাহিনীর কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ও সেই কারণে বেশ কিছু বিতর্কের অবতারণা ঘটে৷
সুনাম
জিএসজি ৯ স্কোয়াডের প্রথম অভিযানই তাদের সুনাম প্রতিষ্ঠা করে৷ ১৯৭৭ সালে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীরা লুফৎহানসার একটি যাত্রীবাহী বিমান অপহরণ করে মোগাদিশুতে নিয়ে যায়৷ ‘ফায়ার ম্যাজিক’ নামের একটি অভিযানে জিএসজি-৯ গোষ্ঠীর কমান্ডোরা মাত্র সাত মিনিটের মধ্যে বিমানের যাত্রীদের মুক্ত করেন৷ অভিযানে আহত হন জিএসজি-৯-এর এক সদস্য ও একজন বিমানকর্মী৷ চারজন বিমান অপহরণকারীর মধ্যে তিনজন ঐ অভিযানে প্রাণ হারায়৷
‘মোগাদিশুর হিরো’
জিএসজি ৯ স্কোয়াডের প্রথম সদস্যদের একজন উলরিশ ভেগেনার৷ মোগাদিশুর অভিযানের পর তিনি জার্মান সরকারের অর্ডার অফ মেরিট সম্মানে ভূষিত হন৷ ‘মোগাদিশুর হিরো’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি৷ ভেগেনার ২০১৭ সালের ২৮শে ডিসেম্বর ৮৮ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন৷
জলে-স্থলে-অন্তরিক্ষে
অপহরণ, সন্ত্রাসী আক্রমণ বা বোমা সরানোর কাজে জিএসজি-৯ স্কোয়াডকে নিয়োগ করা হয়৷ তবে বিশেষ বিশেষ উপলক্ষ্যে কোনো স্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজেও তারা মাঠে নামে৷ প্রয়োজনে জলেও নামে! ২০০৭ সালে জি-এইট গোষ্ঠীর শীর্ষবৈঠক অনুষ্টিত হয় উত্তর জার্মানির হাইলিগেনডাম সৈকতাবাসে৷ সেখানে উপকূল পাহারা দেয় জিএসজি-৯৷
মুখ দেখার উপায় নেই
জিএসজি-৯ স্কোয়াডের অধিকাংশ অভিযানই গোপনীয়৷ তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বিশেষ বাহিনী ১,৯০০-টিরও বেশি অভিযানে অংশগ্রহণ করেছে৷ গোষ্ঠীর প্রধান কার্যালয় জার্মানির সাবেক রাজধানী বন শহরের কাছে সাংক্ত্ আউগুস্তিনে৷
প্রশিক্ষণ
জিএসজি ৯ স্কোয়াডের প্রশিক্ষণের খুব বেশি ছবি না থাকলেও, মাঝেমধ্যে স্কোয়াডের সদস্যরা কোনো বিশেষ উপলক্ষ্যে তাঁদের কর্মক্ষমতা প্রদর্শন করে থাকেন৷ যেমন, দড়িতে করে বহুতল বাড়ির গা বেয়ে মাটিতে নেমে আসা৷ উইসবাডেনে জার্মান অপরাধ দপ্তরের ‘মুক্ত দুয়ার দিবসে’ তার একটি নমুনা দেখাচ্ছেন জিএসজি-৯ সদস্যরা (ফাইল ছবি)৷
হেলিকপ্টার থেকেও...
বন শহরে সাবেক চ্যান্সেলরের দপ্তরের সামনে উড়ন্ত হেলিকপ্টার থেকে দড়ি বেয়ে মাটিতে নেমে দেখাচ্ছেন জিএসজি-৯ সদস্যরা (ফাইল ছবি)৷
মহড়া
জিএসজি-৯ সদস্যদের প্রশিক্ষণের কোনো অন্ত নেই৷ ছবিতে তাঁদের একটি রেলওয়ে স্টেশনে সন্ত্রাসী আক্রমণের পর আহতদের উদ্ধার করার মহড়ায় অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে৷ অবশেষে জিএসজি-৯ গোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ বাড়িয়ে বার্লিনে স্কোয়াডে আরো একটি মুখ্য কার্যালয় খোলার পরিকল্পনা চলেছে৷ গোষ্ঠীর সদস্যসংখ্যা গোপন রাখা হলেও তা আপাতত প্রায় ৪০০ বলে মিডিয়ার অনুমান৷