প্রসঙ্গ : জিএসপি
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩সাভারের রান প্লাজা ধসে ১,৩৪২ জন পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর পর গত ২৮শে জুন বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে শুধু রানা প্লাজা নয়, এর আগে তাজরীন ফ্যাশানসসহ আরো কয়েকটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড এবং দুর্ঘনায় শ্রমিকদের মৃত্যু বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি করে৷
তবে জিএসপি স্থগিতের পর থেকে শর্ত পূরণের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ৷ কাজ করছে শ্রমিক নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশ উন্নয়নের জন্যও, জানিয়েছেন বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মিকাইল শিপার৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা বুয়েটের ৩০টি বিশেষজ্ঞ টিম দেশের ১,৭৫০টি পোশাক কারখানার ভবনসহ সার্বিক নিরাপত্তার দিক যাচাইয়ের কাজ শুরু করবে৷ তিনি জানান, আরো অনেক কাজ দৃশ্যমান হতে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে৷ তবে এরই মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে৷
বাংলাদেশের এসব তত্পরতা সত্ত্বেও মার্কিন মনোভাব তেমন বদলায়নি৷ একদিন আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা পোশাক শিল্পের মালিকদের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের রক্তভেজা পোশাক কিনবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ তিনি বলেন, রানা প্লাজাসহ সাম্প্রতিক সময়ে বড় দু'টি দুর্ঘটনায় এক হাজারেরও বেশি পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছে৷ তাঁর মতে, লোভ, দুর্নীতি এবং অজ্ঞতার কারণেই এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে৷
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, পোশাক কারখানার মালিকরা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কাজ করেছেন শ্রমিক নিরাপত্তা এবং কর্ম পরিবেশ উন্নয়নে৷৷ এরই মধ্যে ট্রেউ ইউনিয়ন আইন হয়েছে৷
শ্রমিদের বেতন বাড়াতে নতুন মজুরি বোর্ডও গঠন করা হয়েছে৷ তবে তিনি স্বীকার করেন যে, কারখানার পরিবেশ এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে এখনও তারা সন্তোষজনক মান অর্জন করতে পারেননি৷ তিনি বলেন, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল কারখানা ভবন এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেয়ার পরই তারা শ্রমিক নিরাপত্তা উন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন৷
আর সিপিডি-র অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম মনে করেন, স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে জন্য বাংলাদেশকে তৈরি পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে কাজের পরিবেশ, শ্রমিক নিরাপত্তা এবং শ্রমিক অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হবে৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, নিজেরা তৃপ্ত হলে হবে না৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সন্তুষ্ট করতে হবে৷ আর এখানে ফাঁকির কোনো সুযোগ নেই৷