জেলে যাচ্ছেন হ্যোনেস, ক্লাব থেকে পদত্যাগ
১৪ মার্চ ২০১৪শুক্রবার হ্যোনেস জানান, ‘‘আমি আমার আইজীবীদের জানিয়েছি তাঁরা যাতে আপিল না করেন৷ কর ফাঁকি দেয়া আমার জীবনের একটা ভুল৷ আমি আমার ভুল স্বীকার করছি৷'' এরপর তিনি বলেন, ‘‘বায়ার্ন মিউনিখের প্রেসিডেন্ট পদ এবং জার্মান দলটির উপদেষ্টা বোর্ড থেকে পদত্যাগ করছি আমি৷ আমি চাই না আমার কারণে ক্লাবের কোন ক্ষতি হোক৷''
তাঁর কৌঁসুলিরা স্বভাবতই আশা করেছিলেন যে, যেহেতু হ্যোনেস নিজেই কর বিভাগকে তাঁর কর ফাঁকি দেওয়ার ব্যাপারে জানিয়েছেন – জার্মান আইনে যাকে বলে ‘সেলব্স্ট-আনজাইগে' বা সেল্ফ-ডিক্লারেশন – সেহেতু তাঁরও অন্য পাঁচজন ‘অপরাধীর' মতোই প্রোবেশনে সাজা পেতে হবে: অর্থাৎ কারাদণ্ড হওয়া সত্ত্বেও জেলে যেতে হবে না৷
কিন্তু যে আমলে বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংক থেকে গোপনে কপি করা সিডি জার্মান কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছাচ্ছে এবং তাঁরা ক্ষেত্র বিশেষে নগদ মূল্য দিয়ে কর ফাঁকি দাতাদের নামের তালিকা কিনছেন সে আমলে বিবেকদংশন ও পরিতাপের নিদর্শন হিসেবে ‘আত্ম-ঘোষণার' মূল্য অনেকটাই কমে এসেছে, এমনকি বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে এই নিজের-বিরুদ্ধে-মামলায়-রাজসাক্ষী-হয়ে-পার-পাওয়ার আজব প্রক্রিয়াটি নিয়ে৷
তার উপর যখন হ্যোনেসের ফাঁকি দেওয়া করের পরিমাণ শুনানির তিন দিনেই ৩৫ লাখ ইউরো থেকে, এক কোটি ৮৫ লাখ ইউরো হয়ে দু'কোটি ৭২ লাখ ইউরোয় পৌঁছায় – এবং সেই সঙ্গে জানা যায় যে, হ্যোনেস কর বিভাগকে ২০১৩ সালের গোড়াতেই এ বিষয়ে অবগত করতে পারতেন – তখন তাঁর কারাবাস এড়ানোর বাস্তবিক সম্ভাবনা তাঁর অতি বড় ভক্তদের চোখেও ক্ষীণ হয়ে আসে৷
উলি হ্যোনেস এককালে দুর্ধর্ষ ফুটবল খেলোয়াড়৷ হাঁটুর ইনজুরির জন্য খেলা ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখের তরুণতম ম্যানেজার হন, পরে প্রেসিডেন্ট৷ বায়ার্নকে বিশ্বের সফলতম এবং সর্বাপেক্ষা ধনি ক্লাবগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত করার পিছনে উলি হ্যোনেসের অবদান কম নয়৷
হ্যোনেস নাকি সুইজারল্যান্ডে কোটি কোটি ইউরো নিয়ে বস্তুত ফাটকা খেলেছেন বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে – সেখান থেকেই তাঁর বিপুল লাভালাভ এবং পরিণামে কর ফাঁকি৷ কিন্তু কাজটা খুব হিসাবী কিংবা ঠাণ্ডা মাথার কাজ হয়নি৷ শিল্পপতি হ্যোনেস, ম্যানেজার হ্যোনেস বা দাতা হ্যোনেস – যার দানের পরিমাণ পঞ্চাশ লাখের বেশি, বলে শোনা যায় – ফুটবল-পাগল এই মানুষটির এ রকম একটা ভুল হল কি করে, তা নিয়েই মাথা ঘামাচ্ছেন অনেক জার্মান৷
এপিবি, এসি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স)