ঝুঁকির মুখে প্রায় ৬০ লাখ গ্রাহক
৪ জুন ২০১৩বাংলাদেশের প্রায় ৬০ লাখ গ্রাহক ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড ব্যবহার করেন৷ এখন প্রায় সব ব্যাংকই এই দু’ধরনের কার্ড ইস্যু করে গ্রাহকদের৷ ২৪ ঘণ্টা নগদ টাকা তোলা এবং কেনাকাটার জন্য দ্রুতই এই কার্ড বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ কিন্তু সম্প্রতি ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্রের এক সদস্য মোশররফ হোসেন গ্রেপ্তার হওয়ার পর, কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে ব্যাংকগুলো৷
গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, এই কার্ড জালিয়াতির ঘটনা আগে থেকেই ঘটে আসলেও ব্যাংকগুলো তাদের সুনামের কথা চিন্তা করে চুপচাপ ছিল৷ কিন্তু এখন তারা তা স্বীকার করছে৷ তিনি জানান, কয়েকমাস আগে সেলিম নামে এক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত ব্র্যাক ব্যাংক থেকে চার লাখ ঢাকা টাকা তুলে নিয়েছে বলে জানা গেছে৷ অন্যদিকে, চট্টগ্রামে সিটি ব্যাংকেও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে৷ জালিয়াত চক্র জাল ক্রেডিট কার্ড থেকে ১০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেছেবলে খবর৷ আর পুলিশ এই অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুর রহমান এবং শ্রীলংকান নাগরিক মোহনা থারাসকে গ্রেপ্তার করেছে৷
পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশে ম্যাগনেটিক স্ট্রিপের যে কার্ড ব্যবহার করা হয় তা জাল করা খুবই সহজ৷ এ পর্যন্ত যে ক’জন ধরা পড়েছে তারাও একই কথা বলেছে৷ এছাড়া এটিএম বুথগুলো পুরনো প্রযুক্তির৷ বুথের কার্ড পাঞ্চ করার জায়গায় স্ক্যাম প্রতিরোধক কোনো ব্যবস্থা নেই৷ তাই সেখান থেকেই এতদিন গ্রাহকদের কার্ডের তথ্য এবং পিন চুরি হয়ে আসছিল৷ কিন্তু সম্প্রতি আটক হওয়া মোশাররফ আরো আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে কার্ড জালিয়াতির জন্য৷ মশিউর রহমান জানান, তাদের ধারণা এই প্রযুক্তি এখন আরো কয়েকটি গ্রুপের হাতে রয়েছে৷ যা স্বাভাবিকভাবেই আশঙ্কার কারণ৷ ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন জীশান কিংশুক হকও ডয়চে ভেলের কাছে স্বীকার করেন যে কমপক্ষে একবার টাকা উত্তোলনের আগে এই প্রতারণা ধরার সুযোগ নেই৷
বাংলাদেশে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ডে এখনো মাইক্রো চিপস ব্যবহার করা হয় না৷ অথচ গোয়েন্দারা মনে করেন, মাইক্রো চিপস ব্যবহার শুরু হলে জালিয়াতি অনেক কমবে৷ কারণ এটি কপি করার প্রযুক্তি এখানো বাংলাদেশে নেই৷