ঝুঁকির মুখে স্বর্গদ্বীপ
ফিজিকে এক সময় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় স্বর্গোদ্যান মনে করা হত৷ কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে এর টিকে থাকা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ ফিজিতে জন্ম নেয়া আলোকচিত্রী অ্যারন মার্চ জন্মভূমির সৌন্দর্য্যকে ক্যামেরাবন্দি করার চেষ্টা করেছেন৷
হুমকির মুখে স্বর্গ
প্রবাল প্রাচীরের কারণে ফিজির মামানুকা দ্বীপ স্নরকেলারদের স্বপ্নের গন্তব্য৷ কিন্তু স্বচ্ছ পানি এবং রঙিন মাছ ধীরে ধীরে কমে আসছে সেখানে৷ সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় মারা যাচ্ছে প্রবালগুলো, ফলে ভেঙে পড়ছে বাস্তুসংস্থান৷ এতে মাছ ধরার ক্ষেত্রে এবং পর্যটনেও প্রভাব পড়ছে, যা দেশের মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস৷
সমুদ্র সৈকতের ক্ষয়
নামাতাকুলা গ্রামে দু’টি মেয়ে সৈকত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে৷ ঝড় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠে পানির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দক্ষিণের দ্বীপ ভিতি লেভুর সৈকত অনেকটাই সমুদ্রগর্ভে চলে গেছে৷
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়ছে যে গ্রাম
সাগরে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়া এবং ঝড়ের তাণ্ডব দেখেছে নামাতাকুলা গ্রামের মানুষ৷ তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিজেরাই এর মোকাবিলা করবেন৷ ২০১৭ সালে তাঁরা এমন একটি প্রকল্পের খোঁজ পেয়েছেন, যেখানকার কর্মীরা উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে৷ এই দলটি জার্মানিতে আয়োজিত এবারের জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিয়েছে৷
অন্যত্র চলে যাওয়া
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘূর্ণিঝড় উইনস্টন ফিজির দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ ভুনিসাভিসাভি গ্রামে আঘাত হানে৷ সৈকতের অনেকটাই ধুয়ে যায় এতে, ধ্বংস হয় বেশ কিছু ভবন৷ এরপর থেকে প্রায়ই লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়ছে ফসলি জমিতে, পানির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি৷ এ সময় অনেক পরিবার বাড়ির ভেতর আটকা পড়ে থাকেন অথবা আগেভাগেই উঁচু জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নেন৷
উঁচু স্থানে চলে যাওয়া
ভুনিসাভিসাভি গ্রামের বাসিন্দা সেপেসা কিলিমো ওয়াকাইরাতাভু নিজের বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় চলে গেছেন৷ ২০১৬ সালের ঝড়ে তাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো পরিবার অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়েছে৷
পূর্বপুরুষের ভেটেমাটি ছেড়ে যাওয়া
২০১৬ সালে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগে, ভুনিসাভিসাভি গ্রামের প্রবীণরা তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে একেবারেই রাজি হননি৷ তাঁরা বিশ্বাস করতেন পূর্বপুরুষরাই রক্ষা করবেন তাঁদের৷ কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াল ছোবলে তাঁরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে বাধ্য হন, যেমন ৮৫ বছরের মারিয়া ললু৷
কমছে পর্যটকদের সংখ্যা
ভিতি লেভু দ্বীপটির প্রবাল সৈকত পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র৷ এখানে সমুদ্র সৈকতের খুব কাছেই বৈচিত্রময় প্রবাল প্রাচীর দেখতে পাওয়া যায়৷ কিন্তু সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রবালগুলো ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ কিছু অংশ একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে৷ তাই পর্যটন সংস্থাগুলোর আশংকা, প্রবাল ধ্বংস হয়ে গেলে পর্যটকরা এখানে আসা ছেড়ে দেবেন৷
বিকল্প পথ
ফিজি কর্তৃপক্ষ পর্যটক টানতে অন্য পথ ধরেছেন৷ তারা কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়েছেন৷ ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড এর এক বড় উদাহরণ৷ সমুদ্রের পানি এনে সৈকতের কাছে এটি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে বেশ কয়েকটি পাঁচতারা হোটেল নির্মাণ করা হয়েছে৷