টাইটানিকের রোজ চলে গেলেন টাইটানিকের দেশে
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০উজ্জ্বল পান্নার মত সবুজ চোখজোড়া, সোনালি চুলের যে যুবতী গ্লোরিয়া স্টুয়ার্ট সেই তিনের দশকের হলিউড ছবিতে টুকটাক অভিনয় করতেন, ১৯৪৬ সালেই অভিনয় থেকে অবসরে চলে গিয়েছিলেন তিনি৷ চল্লিশ বছর পার করে গ্লোরিয়া ফের ফিরে আসেন অভিনয়ের আঙ্গিনায়৷ সময়টা ১৯৮৭৷ এমনকি এত বয়সে ফিল্মে অভিনয়ের মত ধকলদার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে আনন্দই পেতেন কাজ করতে৷ টাইটানিক ছবিটা বানাবার সময় পরিচালক জেমস ক্যামেরন তাই সেই বৃদ্ধ বয়সের রোজ-এর ভূমিকায় বেছে নিয়েছিলেন এই গ্লোরিয়াকেই৷ টাইটানিকের জীবিত যাত্রী যে রোজ-এর হাত থেকে সেই বিশাল নীল হীরে বসানো দামী নেকলেসটা সমুদ্রের গভীর জলেই ফিরে যায় ছবির শেষ দৃশ্যে৷ যেখানে রোজ কালেভার্ট-এর আত্মাও যেন ফিরে যায় টাইটানিকের সঙ্গেই সলিল সমাধিতে শুয়ে থাকা তার প্রেমিক জ্যাক বা লিওনার্দোর কাছে৷ জলের তলায় তাদের মিলন হয়৷ তখন আবার রোজ যুবতী, ছবিতে আসলে কেট উইন্সলেট হয়ে গেছে৷
টাইটানিকে অতএব ১০১ বছরের বৃদ্ধার ভূমিকায় নেমেছিলেন গ্লোরিয়া৷ তখন নিজের বয়স সাতাশি৷ এতখানি বয়সে এতটা অসাধারণ অভিনয়ের পর তাই সবচেয়ে বেশি বয়সে অভিনয়ের অস্কার পুরষ্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন তিনি৷ এছাড়া এই ‘কাম ব্যাক' পিরিয়ডে শার্লি টেম্পলের বেশ কয়েকটা ছবি ছাড়াও ‘দ্য ইনভিজিবল ম্যান' ছবিতে দারুণ অভিনয় করেছিলেন গ্লোরিয়া৷
পড়াশোনা করেছিলেন দর্শন আর অভিনয় নিয়ে৷ বছর পাঁচেক আগে স্তন ক্যান্সারের শিকার হন৷ সে অসুখটাকে পাশ কাটিয়েছিলেন শক্ত হাতে৷ তারপর ক্যালিফোর্নিয়ায় নিজের বাড়িতে ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে টাইটানিকের দেশে ফিরে গেলেন গ্লোরিয়া৷ বয়স হয়েছিল ঠিকঠাক একশো৷
ক্যামেরনের আভাতার বাজারে আসার আগে পর্যন্ত ১৯৯৭ সালের রিলিজ টাইটানিক ছিল বিশ্বের জনপ্রিয়তম ছবি৷ তো, সে ছবি যতদিন মনে থাকবে, ততদিন গ্লোরিয়াকেও মনে রাখতে হবে৷ কারণ, আসল নায়িকা তো তিনিই৷ যে কিনা সত্যিই টাইটানিকে চড়ে ভেসেছিল৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম