1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘টিকাদান কর্মসূচির ধীর গতি ভালোর জন্যই’

২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

জার্মানি, তথা ইউরোপে করোনা ভাইরাসের টিকা বিতরণে বিলম্ব ও জটিলতার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সার্বিক নীতির পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন৷ সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে জার্মানির সব মানুষের জন্য টিকার অঙ্গীকার করেছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/3ohk6
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ছবি: Stefan Boness/imago images/IPON

ইসরায়েল, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ করোনা টিকা দেবার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি দেখালেও জার্মানি তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশগুলির মানুষকে অনেক অপেক্ষা করতে হচ্ছে৷ ফলে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ বাড়ছে৷ সোমবার জার্মানিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির ‘ভ্যাকসিন সামিট'-এ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল টিকা দেবার ক্ষেত্রে ধীর গতির কারণ ব্যাখ্যা করে ইইউ-র নীতির পক্ষে সওয়াল করলেন৷ তার মতে, টিকাদান কর্মসূচির এমন ধীর গতির পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷

ম্যার্কেল বলেন, ইসরায়েল, ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ যেভাবে তড়িঘড়ি করে জরুরি ভিত্তিতে একাধিক টিকা প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেই পথে যায় নি৷ সাধারণ মানুষের মনে যথেষ্ট আস্থা সঞ্চার করতে প্রত্যেকটি আবেদন ভালো করে খতিয়ে দেখে তবেই টিকা প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া ওষুধ কোম্পানিগুলির সঙ্গে দীর্ঘ দরকষাকষির পর এমন চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে, যার মাধ্যমে কোম্পানিগুলির দায়বদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷ সেইসঙ্গে তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হয় নি৷ উল্লেখ্য, ইসরায়েল টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহের প্রস্তাব দিয়ে ফাইজার-বায়োনটেক কোম্পানির কাছ থেকে টিকা আদায় করেছে৷

সোমবারের ‘ভ্যাকসিন সামিট'-এর প্রেক্ষাপটে একাধিক কোম্পানি প্রাথমিক বিলম্ব কাটিয়ে অদূর ভবিষ্যতে আরো বেশি টিকা সরবরাহের অঙ্গীকার করেছে৷ যেমন বায়োনটেক কোম্পানি বাড়তি সাড়ে সাত কোটি টিকা জোগান দেবে বলে জানিয়েছে৷ চলতি বছরে ২০০ কোটি টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে এই কোম্পানি৷ অ্যাস্ট্রাজেনিকা কোম্পানিও বছরের প্রথম তিন মাসে চার কোটি টিকা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সরবরাহ করবে৷ তাছাড়া জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানি সম্ভবত ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং জার্মানির কিয়োরভ্যাক কোম্পানি মে মাসে ইইউ-র কাছে ছাড়পত্রের আবেদন করতে চলেছে৷ ফলে ম্যার্কেল মনে করছেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে জার্মানির সব ইচ্ছুক মানুষ করোনা টিকা পেয়ে যাবেন৷

প্রবল সমালোচনা সত্ত্বেও জাতীয় স্তরে করোনা ভাইরাসের টিকা সংগ্রহের বদলে ইইউ কমিশনের মাধ্যমে কোম্পানিগুলির সঙ্গে বোঝাপড়ার সার্থকতাও তুলে ধরেন ম্যার্কেল৷ তাঁর মতে, এ ক্ষেত্রে ‘একলা চলো রে' নীতি গ্রহণ করলে টিকার ন্যায্য দাম পাওয়া যেত না এবং ইউরোপের কিছু অঞ্চল বঞ্চিত হতো৷ তাছাড়া ইউরোপের রাজনৈতিক ঐক্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতো৷

বাহ্যিক জটিলতার পাশাপাশি জার্মানির ফেডারেল কাঠামোর কারণে টিকাদান কর্মসূচির ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার অভিব নিয়েও অভিযোগ উঠেছে৷ কিছু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতির পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ সোমবারের আলোচনায় সে বিষয়ে ঐকমত্য দেখা গেছে৷ আগামী ১০ই ফেব্রুয়ারি ম্যার্কেল ও মুখ্যমন্ত্রীরা চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন৷ সংক্রমণের হার কমতে থাকলেও করোনা ভাইরাসের ছোঁয়াচে সংস্করণ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল৷

এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)