টিকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারলো না জার্মানি
১ ফেব্রুয়ারি ২০২২জানুয়ারি মাসের শেষে জার্মানির মোট জনসংখ্যার কমপক্ষে ৮০ শতাংশকে করোনা টিকার একটি ডোজ দেবার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর৷ রবিবারের হিসেব অনুযায়ী মাত্র ৭৫ শতাংশের মতো মানুষ কমপক্ষে একটি ডোজ পেয়েছেন৷ তাছাড়া বড়দিন থেকে জানুয়ারির শেষের মধ্যে তিন কোটি প্রথম, দ্বিতীয় বা বুস্টার ডোজ দেবার লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করা সম্ভব হয় নি৷ বাস্তবে এই সময়কালে এক কোটি ৭৩ লাখের মতো ডোজ দিতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ৷ শলৎসের এক মুখপাত্র জার্মানিতে টিকা সম্পর্কে অনীহাকে এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেন৷
প্রায় এক সপ্তাহ আগে শলৎস নিজেই এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতা মেনে নিয়েছিলেন৷ তবে টিকাকরণ কর্মসূচি চাঙ্গা করতে বিশাল আকারের এক প্রচার অভিযানের ফলে অদূর ভবিষ্যতে আরও কিছু সাফল্যের আশা করছে সরকার৷ তবে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের সূত্র অনুযায়ী বাস্তবে সম্ভবত আরও বেশি মানুষ করোনা টিকা নিয়েছেন৷ জার্মানিতে তথ্য-পরিসংখ্যান প্রস্তুতির অবকাঠামোয় দুর্বলতার কারণে সঠিক সংখ্যা জানা যাচ্ছে না বলে মনে করা হচ্ছে৷
জার্মান সরকারের সর্বশেষ তথ্য-পরিসংখ্যান অনুযায়ী জনসংখ্যার ৭৪ শতাংশ করোনা টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পেয়েছে৷ ৫২ দশমিক আট শতাংশ মানুষ বাড়তি বুস্টার ডোজও পেয়েছেন৷ করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন সংস্করণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে জার্মানিতে এই বুস্টার ডোজকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ এখনো এত বেশি মানুষ করোনা টিকা না নেওয়ায় ২০২২ সালেও জার্মানিতে মহামারি অবসানের আশা দেখছেন না অনেক মানুষ৷ একটি জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষের কাছে সেটাই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ৷ জার্মানিতে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করতে সংসদ সদস্যের উদ্যোগ এখনো তেমন গতি পাচ্ছে না৷ নানা তর্কবিতর্কের পর শেষ পর্যন্ত এই সংক্রান্ত আইন অনুমোদিত হলেও সেটি কার্যকর করা কতটা সম্ভব হবে, সে বিষয়েও সংশয় রয়েছে৷ ভবিষ্যতে করোনা ভাইরাসের আরও মারাত্মক কোনো সংস্করণের আবির্ভাবের আগে যথেষ্ট সংখ্যক মানুষকে টিকা দিতে না পারলে জার্মানিতে আরও কড়া বিধিনিয়ম চালু করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
চরম ছোঁয়াচে ওমিক্রন সংস্করণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জার্মানিতে বেশ কিছু বিধিনিয়ম চালু রয়েছে৷ হোটেল-রেস্তোরাঁসহ একাধিক স্থাপনায় শুধু করোনা টিকার তিনটি ডোজ পাওয়া মানুষের অবাধ প্রবেশাধিকার রয়েছে৷ দুটি ডোজ নেওয়া থাকলে প্রবেশের আগে করোনা পরীক্ষাও করাতে হবে৷ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা মানুষের জন্যও ছাড় দেওয়া হচ্ছে৷ অন্যদিকে সুযোগ সত্ত্বেও টিকা নিতে অনিচ্ছুক মানুষদের কার্যত একঘরে করে রাখা হয়েছে৷ এত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও সংক্রমণের গতি রোখা যাচ্ছে না৷ প্রতি এক লাখ মানুশের মধ্যে করোনা সংক্রমণের গড় সাপ্তাহিক হার মঙ্গলবার ১,২০০ পেরিয়ে গেছে৷ তবে করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ মানুষের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম থাকায় বিধিনিষেধ শিথিল করার ডাক বাড়ছে৷ সরকার অবশ্য এখনই সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)