পরস্পরের পিঠ চাপড়ালেন মোদী ও ট্রাম্প
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশ সফরে গিয়ে যখনই সম্ভব প্রবাসী ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে এসেছেন৷ বিশাল স্টেডিয়াম বা হলে তাঁদের সামনে ভাষণ দিয়েছেন৷ এই গোষ্ঠীর মধ্যে মোদী ও তাঁর বিজেপি দলের সমর্থকদের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে৷ দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রথম অ্যামেরিকা সফরে এসে তাই দ্বিগুণ উৎসাহে প্রায় ৫০,০০০ মানুষের সামনে এক জনসভায় ভাষণ দিলেন তিনি৷ টেক্সাস রাজ্যের হিউস্টন শহরের বিশাল স্টেডিয়ামে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠান দেশে-বিদেশে বিশাল প্রচার পেয়েছে৷ কারণ সেখানে মোদীর পাশে ছিলেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ মার্কিন ভূখণ্ডে এর আগে পোপ ছাড়া অন্য কোনো বিদেশি নেতার জনসভায় এত মানুষের সমাগম হয়নি বলে দাবি করা হচ্ছে৷
রবিবারের জনসভায় দুই নেতাই এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করলেন৷ দুজনেই যে যার দেশে বেশ বিতর্কিত নেতা৷ দুজনের বিরুদ্ধেই উগ্র জাতীয়তাবাদী, দক্ষিণপন্থি, সংকীর্ণ রাজনীতি ও সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির অভিযোগ আনা হয়৷ মোদী সবে আবার নির্বাচিত হলেও কাশ্মীর-নীতি, পাকিস্তান ও বেহাল অর্থনীতির কারণে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন৷ অন্যদিকে ট্রাম্প তাঁর প্রায় সব সিদ্ধান্ত ও নীতির কারণেই বিতর্কিত৷ আগামী বছরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবার হোয়াইট হাউসে ফেরার জন্য তিনি মরিয়া হয়ে লড়াই করছেন৷ হিউস্টনের জনসভায় দুজনেই পরস্পরের প্রতি উষ্ণ সমর্থন জানালেন৷ মোদী খোলাখুলি ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্পকে আবার ক্ষমতায় ফেরানোর আবেদন করলেন৷ ট্রাম্পও মোদীকে অ্যামেরিকার সবচেয়ে আস্থার বন্ধুদের একজন হিসেবে তুলে ধরলেন৷ উল্লেখ্য, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকদের একটা বড় অংশ ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন৷
মোদী ও ট্রাম্প সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অক্লান্ত সংগ্রামে ঐক্যের ঘোষণা করেন৷ মোদী নাম না করেও পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের প্রতি লাগাতার মদত দেবার অভিযোগে সোচ্চার হয়ে ওঠেন৷ সেই প্রসঙ্গে তিনি ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা দূর করার সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করেন৷ ‘হাউডি মোদী’ জনসভায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন মোদী৷
টেক্সাসের জনসভায় শুধু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নন, বিরোধী ডেমোক্র্যাটিক দলের বেশ কয়েকজন নেতাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা স্টেনি হয়ার বলেন, অ্যামেরিকার দুই রাজনৈতিক দলই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়৷ তবে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা ও মানবাধিকারের প্রতি ভারতের ঐতিহাসিক শ্রদ্ধাবোধের কথা মনে করিয়ে দেন৷ এ প্রসঙ্গে তিনি তাঁর ভাষণে মহাত্মা গান্ধী ও জওহরলাল নেহেরুকেও উদ্ধৃত করেন৷ ডেমোক্র্যাট দলের অন্যতম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বার্নি সান্ডার্স হিউস্টন শহরের এক সংবাদপত্রে লেখা সংবাদভাষ্যে কাশ্মীরে ভারতের দমন নীতি সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীরবতার সমালোচনা করেন৷
এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি)