ট্যাংকার জব্দ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বিট্রিশ মন্ত্রিসভা
২২ জুলাই ২০১৯ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের নেতৃত্বে এই জরুরি বৈঠকে অংশ নেবেন দেশটির মন্ত্রিসভার সদস্য, নিরাপত্তা সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাপ্রধানরা৷ এর মধ্য দিয়ে, লন্ডন তাঁর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে৷
শুক্রবার উপসাগরীয় অঞ্চলে হরমুজ প্রণালিতে ব্রিটিশ পতাকাবাহীট্যাংকার স্টেনাইমপেরো জব্দ করা নিয়ে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে৷ সংকট নিরসনের বদলে ইরানের এমন আচরণকে ‘চরম হতাশার' বলেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট৷
ফ্রান্স আর জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন জেরেমি হান্ট৷ বৈঠক শেষে তিনি জানিয়েছেন, হরমুজ প্রণালিতে সব উত্তেজনা বন্ধ করে স্বাভাবিক নৌ চলাচল নিশ্চিত করাটাকে গুরুত্ব দিচ্ছে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো৷
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া এক চিঠিতে ইরানের এই আচরণকে ‘অবৈধ হস্তক্ষেপ' হিসেবে দাবি করেছে যুক্তরাজ্য৷ সোমবার বিকেলের মধ্যে এ ঘটনায় সরকারের অবস্থান সংসদ সদস্যদের অবহিত করবেন হান্ট৷
তেহরানের প্রতিশোধ?
ইরানের দাবি, মাছ ধরার একটি নৌকাকে আঘাত করার পর ব্রিটিশ ট্যাঙ্কারটি জব্দ করেছে রেভল্যুশনারি গার্ড৷ ইরানের অভিযোগ, ব্রিটিশ পতাকাবাহী ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরো ট্রান্সপন্ডার বন্ধ রেখেছিল৷ ফলে সতর্কবার্তার কোনো উত্তর ট্যাংকার থেকে আসেনি৷ ফলে তদন্তের পরই ট্যাংকার এবং তার ২৩ নাবিকের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে৷
পর্যবেক্ষকরা এই ঘটনাকে ইরানের প্রতিশোধ হিসেবেই দেখছে৷ কারণ চলতি মাসের শুরুতেই জিব্রাল্টার প্রণালিতে ইরানের একটি জাহাজ জব্দ করেছিল যুক্তরাজ্য৷
ট্যাংকার জব্দ করার আগে ব্রিটিশ রণতরী এইচএমএস মনট্রোসের সঙ্গে রেডিওতে কথা বলে ইরান৷ নিরাপত্তার কারণ স্টেনা ইমপেরো তদন্ত করতে চেয়েছিল তারা৷
প্রকাশিত ওই অডিও বার্তায় শোনা যায়, স্টেনা ইমপেরোকে গতিপথ পরিবর্তনের কথা বলেছিল ইরানি নৌসেনারা৷ তাঁরা ইংরেজিতে বলেছিল, ‘‘যদি তোমরা সরে দাঁড়াও, তাহলে তোমরা নিরাপদ থাকবে৷''
কিন্তু ব্রিটিশ রণতরীর পক্ষে বলা হয়, স্টেনা ইমপেরো আন্তর্জাতিক জলসীমায় আছে৷ তাই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে ট্যাংকারটির গতিপথ রুদ্ধ করা বা বাধা দেয়ার সুযোগ নেই৷
কিন্তু এমন কথোপকথনের পরেও, নিরাপত্তার অজুহাতে জাহাজটি তল্লাশি করার কথা জানানো হয় ইরানের পক্ষ থেকে৷ মনট্রোস আগের কথা আবারও পুনরাবৃত্তি করে, তা সত্ত্বেও ইরানি সেনারা ট্যাংকারটি জব্দ করে৷
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ৷ তাঁর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছে করেই যুক্তরাজ্যেক টেনে এনে জলঘোলার চেষ্টা করছে৷ ‘আমাদের বিচক্ষণতা আর দূরদর্শিতা এ বিরোধ মেটাতে পারে'- নিজের ট্যুইটারে এভাবে লিখেছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷
টিএম/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)