চলচ্চিত্র উৎসব
২৭ এপ্রিল ২০১২‘ওয়ার উইচ' শুধু শ্রেষ্ঠ ছবি নয়, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কারটিও লুফে নিয়েছে৷ শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছে ১৫ বছর বয়স্ক রেচেল মুয়ানজা৷ ক্যানাডার মন্ট্রিয়াল শহরের ছবির পরিচালক কিম নুয়েন'এর ছবি ওয়ার উইচ৷
ছবির মূল নায়িকা রেচেলের জীবন কাহিনি খুবই নাটকীয়৷ বাস্তবে রেচেল বসবাস করতো পথে পথে৷ তার থাকার কোন নির্দিষ্ট জায়গা ছিল না৷ ছবিতে রেচেল একটি গর্ভবতী টিন-এজারের ভূমিকায় অভিনয় করেছে৷ দেশের যুদ্ধ বা আন্দোলনে সময় রেচেল জীবনের পরিবর্তনগুলো তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে৷
একটি সাক্ষাৎকারে কিম নুয়েন বলেছেন, ‘‘যেই মুহূর্তে আমি রেচেলকে দেখি, আমি সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারি যে ওর মধ্যে লুকিয়ে আছে অসম্ভব প্রতিভা৷ আমি পরে রেচেলকে প্রশ্ন করেছিলাম কীভাবে এত দ্রুত হাসি এবং কান্নার অভিনয় করতে পারে৷ এবং খুবই স্বাভাবিকভাবে সে হাসতে পারে এবং কাঁদতে পারে৷ আমাকে রেচেল উত্তর দিয়েছিল, যে তাঁকে শুধু অতীতের কথা মনে করতে হয়৷''
ফেস্টিভ্যালের জুরিরা বলেছেন ‘ওয়ার উইচ' হচ্ছে ঘৃণা এবং ভালবাসার সংমিশ্রণে তৈরি অসাধারণ একটি ছবি৷
ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছে ড্যারিয়েল আরেচাদা এবং হাবিয়ের নুনিয়েস ফ্লোরিয়ানকে৷ ছবির নাম ‘উনা নোচে' বা একটি রাত৷ ছবির পরিচালক লুসি মলি৷ ছবিতে দেখানো হয়েছে কয়েকজন কিউবান টিন-এজারদের জীবন৷ যারা চেষ্টা করে পালিয়ে অ্যামেরিকার ফ্লোরিডায় যাওয়ার চেষ্টা করে৷ তবে ছবির কাহিনী বাস্তবে ঘটেছে কারণ ট্রাইবেকা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে আসার পথে নুনিয়েস ফ্লোরিয়ান আরেকজন অভিনেতাকে নিয়ে মায়ামিতে উধাও হয়ে যান৷ সেখানেই ছবির শুটিং চলছিল৷ ‘উনা নোচে' ছবিটি শ্রেষ্ঠ সিনেমাটোগ্রাফির পুরস্কারও পেয়েছে৷
শ্রেষ্ঠ ডকুমেন্টারির পুরস্কার পেয়েছে ভারতীয় নিশা পাহুজার ‘দ্যা ওয়ার্ল্ড বিফোর হার'৷ ছবিতে ভারতীয় মেয়েদের দৈনন্দিন জীবন, তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে৷ দেখানো হয়েছে একদল মেয়ের লক্ষ্য হল মিস ইন্ডিয়া টাইটেল জেতা৷ তারা সেভাবে নিজেকে তৈরি করছে৷ এবং তাদের সঙ্গে দেখানো হয়েছে হিন্দু মৌলবাদী সমর্থকদের কার্যকলাপও৷
এছাড়া ইরাকিদের জীবন কাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছে ছবি ‘দ্য লিস্ট'৷ কার্ক জনসন ইরাক যুদ্ধের সময় ইরাকে ছিলেন৷ সেখানে তিনি দেখেছেন অনেক ইরাকি অ্যামেরিকানদের সঙ্গে কাজ করছে৷ যুদ্ধের পর এসব ইরাকিদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে দেখা হয়৷ তাদের মেরে ফেলার এবং অপহরণ করার হুমকি দেয়া হয়৷ তারা বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করছে অ্যামেরিকায় যাওয়ার, তারা অপেক্ষা করছে ভিসার জন্য৷ পরিচালক বেথ মার্ফি জানান, কার্ক একজন অ্যামেরিকান হিরো৷ অ্যামেরিকার মানুষরা কী ভাবে তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে৷ অথচ বাস্তবে আমরা এমন কিছু কিন্তু করিনি৷ বেথ মার্ফি ছবির শুটিং করেছেন ইরাক, সিরিয়া, জর্ডান, মিশর এবং অ্যামেরিকায়৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার (রয়টার্স, এপি)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন