ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে খুশি তালেবান, উদ্বিগ্ন জার্মানি
১৯ নভেম্বর ২০২০জানুয়ারির মধ্যে আফগানিস্তান থেকে অর্ধেক মার্কিন সেনাকে দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁর এই সিদ্ধান্তে খুশি তালেবান। কারণ, ট্রাম্পের সঙ্গে তালেবানের যে চুক্তি হয়েছিল, সেই অনুসারে কাজ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু জার্মানির বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাস রীতিমতো উদ্বিগ্ন। তাঁর মতে, এর ফলে আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে যে শান্তি আলোচনা চলছে, তা ব্যাহত হবে।
ডিডাব্লিউ-র প্রশ্নের জবাবে মাস জানিয়েছেন, ঘটনা হচ্ছে, সরকার ও তালেবান এখন আলোচনার টেবিলে বসেছে। কয়েক দশক পরে গঠনমূলক আলোচনা হচ্ছে। সেই আলোচনাকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। মাসের মতে, শান্তি আলোচনা এখনো প্রাথমিক স্তরে আছে। এখনো অনেক বাধা অতিক্রম করতে হবে। ফলে এই অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতির বদল ঘটানো ঠিক নয়। স্থিতাবস্থা জারি থাকা দরকার। আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করলে, স্থিতাবস্থা থাকবে না। আলোচনায় বাধা আসবে।
আফগানিস্তানে ন্যাটোর মিশনে জার্মানির এক হাজার ৩০০ সেনা আছে। মাস জানিয়েছেন. তাঁরাও আফগানিস্তানে জার্মানির সেনা থাকা, না থাকার বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করছেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আফগানিস্তানের বাস্তব পরিস্থিতির কথা ভাবতে হবে, সেনার নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে।
ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে দুই হাজার মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারপর মাত্র আড়াই হাজার সেনা আফগানিস্তানে থাকবে। ন্যাটো ইতিমধ্যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিলে ন্যাটোর বাহিনীও সেখানে থাকবে না। ন্যাটোর মিশনে ৩০টি দেশের ১২ হাজার সেনা আছে।
তবে জার্মানি ও ন্যাটোর যত উদ্বেগই থাক না কেন, তালেবান এই সিদ্ধান্তে খুশি। তালেবানের মুখপাত্র এএফপি-কে জানিয়েছেন, দুই দেশের লোকের জন্যই এটা ভালো সিদ্ধান্ত। বিদেশি সেনা যত তাড়াতাড়ি চলে যাবে তত তাড়াতাড়ি যুদ্ধ শেষ হবে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প প্রশাসন তালেবানেরসঙ্গে চুক্তি করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ২০২১ সালের মে মাসের মধ্যে সব বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছাড়বে। আর তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা মার্কিন সেনাকে আক্রমণ করবে না। আর আফগানিস্তানে আল কায়দা ও আই এসের মতো সংগঠনকে কাজ করতে দেয়া হবে না। তারপরেই আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়।
তবে পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, বিদেশি সেনা চলে গেলে আফগানিস্তানের অনেকটাই আবার তালেবানের হাতে চলে যাবে। আফগানিস্তান মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, বিদেশি সেনা চলে গেলে, অন্ততপক্ষে সাময়িকভাবে তালেবান লাভবান হবে।
টিমোথি জোনস/জিএইচ/এসজি