1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চেরনোবিলের চুল্লি

অয়গেন থাইসে/এপিবি৭ আগস্ট ২০১৩

চেরনোবিলে ইউক্রেনিয়ান পারমাণবিক চুল্লিটির ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরোধক বহিরাবরণটি ঠিক করা হচ্ছে৷ তবে এর মানে এই নয় যে, এটি পুরোপুরি কাজ করতে সক্ষম হবে এবং এই প্রকল্পে খুব সহজেই অর্থায়ন মিলবে৷

https://p.dw.com/p/19L68
ছবি: DW/Y.Teyze

বহিরাবরণটি ঠিক করতে শত শত নির্মাণ শ্রমিক দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন৷ ইউক্রেন, তুরস্ক, রাশিয়া, জার্মানিসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে এসেছেন এসব শ্রমিক৷ দূর থেকে দেখলে অন্য চুল্লিগুলোর সাথে এর কোনো পাথর্ক্য নজরে পড়বে না৷ তবে কাছে থেকে দেখলে বোঝা যায়, প্রতিটি শ্রমিকের ঘাড়ের চারপাশে ‘রেডিয়েশন গজ' লাগানো আছে৷

নিউ সেইফ কনফাইনমেন্ট এনএসসি প্রতিরক্ষা ঢাকনাটি, যেটিকে বলা হয় সারকোফাগুস – তার নির্মাণ কাজ চলছে ধীর গতিতে৷ যে কোনো সময় এখানে জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে৷ শ্বাস নেয়ার মুখোশ বা মাস্ক পড়া না থাকলে কোনো মানুষের জীবন সংশয় দেখা দিতে পারে অচিরেই৷

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এ চুল্লিটির আশেপাশে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়৷ চুল্লিটির ১০০ মিটার দূরে বরফের স্তর পড়ে ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ঢেকে যায়৷ এনএসসি প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী ভিক্টর জালিজেৎসকি ডয়চে ভেলেকে জানান, তাঁদের ভাগ্য ভালো যে ভেজা আবহাওয়ার সাথে তাঁরা ভালোই লড়াই করেছেন এবং এতে তেমন কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি৷

একটি স্বতন্ত্র এলাকা

১৯৮৬ সালে বিপযর্য়ের পর চেরনোবিল পরমাণু চুল্লিটি থেকে যে পরিমাণ তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছিল, এখন সে মাত্রাটা অনেকটা কম৷ তবে এখানে কাজ করার জন্য তেজস্ক্রিয়তার মাত্রাটা বিবেচনায় রাখা হয়৷ প্রতিটি শ্রমিক এক মাসে মাত্র ১৫ দিন এখানে কাজ করার অনুমতি পায়৷

আটটি ফুটবল মাঠের সমান এই এলাকাটিতে সম্প্রতি কয়েক মিটার পুরু তেজস্ক্রিয় পদার্থ মেশানো মাটি খুড়ে সরিয়ে ফেলা হয়েছে৷ এখানেই বসানো হবে নতুন প্রতিরক্ষা ঢাকনাটি৷ তাই ভূমি থেকে তেজস্ক্রিয়তা বন্ধে কনক্রিটের স্তর দিয়ে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছে৷

Bilder Reportage aus Tschernobyl Juni 2013
নরবার্ট মলিটর মনে করেন তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধন সম্ভব নয়ছবি: DW/Y.Teyze

শ্রমিকরা যখন পুরোনো সারকোফাগুসের দেয়ালে কাজ করেন তখন সরাসরি উচ্চ পর্যায়ের তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসেন তাঁরা৷ এ কারণে একটানা দুই থেকে তিন ঘণ্টা কাজ করতে দেয়া হয় তাঁদের৷ তাঁদের কাজ শেষ হলে নতুন প্রতিরক্ষা বহিরাবরণটি কাজ করছে কিনা – তা পরীক্ষা করে দেখেন বিশেষজ্ঞরা৷

১০০ বছরের সমাধান

আশার কথা হলো, বিশেষজ্ঞরা এরই মধ্যে পুরোনো সারকোফাগুসটি চুল্লি থেকে আলাদা করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন৷ তবে ভিক্টর বলছেন, এরপরও প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি অনিশ্চিতই থেকে যাচ্ছে৷

তিনি বলছেন, সারকোফাগুসের অস্থিতিশীল কাঠামোটি সরানো এবং নতুন প্রতিরক্ষা বহিরাবরণের জন্য অর্থায়ন ইউক্রেনের নিজেদেরই করতে হবে৷ তবে এটা তাদের অথর্নৈতিক অবস্থার উপর নিভর্র করছে৷

এরই মধ্যে প্রকৌশলীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, প্রতিরক্ষা বহিরাবরণ হিসেবে একটি ধনুকাকৃতির ইস্পাতের কাঠামো গঠন করা হবে, যার উচ্চতা হবে কমপক্ষে ১০০ মিটার৷ আর এটি ১০০ বছর টিকে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এনএসসি প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের কো-অরডিনেটর নরবার্ট মলিটর বলছেন, ঐ এলাকা থেকে তেজস্ক্রিয় পদাথর্টিকে সরিয়ে ফেলার মানে হলো, এটিকে স্থায়ীভাবে পারমাণবিক জঞ্জালের গুদামে পরিণত করা৷

আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা

নরবার্ট এও বললেন, চেরনোবিল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে অর্থায়ন জোগানো কতটা কঠিন৷ ২০১১ সালে অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি একটি সম্মেলন করেছিলেন, যেখানে এনএসসি-র তহবিল সংগ্রহের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ৭৫ কোটি ইউরো সহায়তা দিয়েছিল৷

বিশেষজ্ঞরা এখনও জানেন না, কবে এই সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে৷ কিন্তু নরবার্ট মলিটর মনে করেন, সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে কয়েকশ কোটি ইউরো অর্থায়ন প্রয়োজন৷

২০১৫ সালের মাঝামাঝি এনএসসি-র সঙ্গে ইউক্রেনের বতর্মান চুক্তি শেষ হবে৷ এরপর এটি দেখভালের জন্য নতুন সমস্যার মুখোমুখি হবে ইউক্রেন সরকার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য