শক্তিশালী টাকা
১০ আগস্ট ২০১২গত অর্থ বছরে আমদানি রপ্তানির ভারসাম্যহীনতার মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকাকে৷ রপ্তানির তুলনায় আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ায় টান পড়ে ডলারের রিজার্ভে৷ ফলে ডলারের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকে৷ দেড় বছর আগে যেখানে ১ মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল ৬৯ টাকা, গত ডিসেম্বরে তা ৮৫ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়৷
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়৷ গ্রহণ করে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি৷ আমদানি ব্যয় কমাতে এলসি খোলার ওপর নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে৷ আর এর ফলে গত অর্থবছরে এলসি খোলার পরিমাণ শতকরা ৪ ভাগেরও বেশি কমে যায়৷ জ্বালানি তেল ছাড়া সবক্ষেত্রে কমে আমদানি ব্যয়৷ প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানো ১০ ভাগ বেড়ে যায়৷ আর রপ্তানি বাড়ে প্রায় ৬ ভাগ৷ আর তাই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ বিলিয়ন ডলারে৷ আর এর ফলে গত ৬ মাসে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৫ শতাংশ বেড়েছে৷ এখন ডলারের আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার ৮২ টাকার নীচে৷ যাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাফল্য হিসেবে দেখছেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান৷
তবে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবু আহমেদ মনে করেন, আমদানি কমিয়ে টাকার মান ঠিক রাখা সব সময় ইতিবাচক ফল দেয় না৷ তিনি জানান গত অর্থ বছরের শেষে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ২১ ভাগ আর শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে ৬ ভাগ৷ যা উৎপাদন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে৷
আর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ মনে করেন মুদ্রানীতি হওয়া উচিত বিনিয়োগ বান্ধব৷
তাঁর মতে, শিল্প উৎপাদন এবং সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি না হলে টাকার এই মূল্য বৃদ্ধি স্থায়ী নাও হতে পারে৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: জাহিদুল হক