ডাইনোসররা অতিকায় হল কি করে?
২৫ এপ্রিল ২০১১বস্তুত স্যান্ডার ৩০-৪০ জন জার্মান ও সুইশ বিজ্ঞানীদের একটি দলের নেতা, যাদের মধ্যে জীববিজ্ঞানী এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন৷ এরা সাওরোপড ডাইনোসরদের জীববিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেছেন৷ এবং তাদের প্রথম প্রশ্ন ছিল: এই প্রাগৈতিহাসিক জীবগুলি ওরকম বিশাল আকার ধারণ করল কি করে?
সাওরোপড গোত্রের অতিকায় জীবগুলি ১৪ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াত৷ যেরকম লম্বা গলা, সেরকম লম্বা ল্যাজ৷ দৈর্ঘ হয়তো ২০ মিটার৷ থামের মতো পা৷ তিনটে বড় বড় ট্রাক জোড়া দিলে ঐ আকারের একটা ডাইনোসর হয়৷ ওজন একটা বড়সড় হাতির দশ গুণ৷ কিন্তু জীবগুলো এ্যাতোটা বড় হয়ে উঠল কি করে?
স্যান্ডার ও তার সহযোগীরা গবেষণা করে দেখেছেন, ডাইনোসরদের এই বাড় তাদের পরিবেশ কিংবা পারিপার্শ্বিকের জন্য নয়৷ ওদের জীববিজ্ঞানগত বৈশিষ্ট্যের মধ্যেই উত্তরটা লুকিয়ে রয়েছে৷ সুবৃহৎ ডাইনোসরগুলোর গলা অতি লম্বা হওয়ায় তাদের বিশেষ নড়াচড়া করতে হতো না৷ এবং তাদের খাবার চিবনোর কোনো বালাই ছিল না, স্রেফ গিলে ফেলতো, যার অর্থ, ওদের খাবার চিবনোর জন্য মুখের পেশী এবং ভারী মাথার কোনো প্রয়োজন পড়ত না৷ শুধু দিনে আধটন, মানে ৫০০ কিলো খাবার ধরার মতো একটা পেট থাকলেই চলতো৷
ছেলেপুলে মানুষ করা নিয়েও বেশি মাথা ঘামাতো না সাওরোপডরা - কেননা তারা বছরে দু'বার ডিম পাড়ত৷ কে না জানে একক সন্তান ধারণ করা এবং জন্ম দেওয়া, দু'টোই বেশি কষ্টসাধ্য এবং বিপজ্জনক৷ সেইজন্যই তো ডাইনোসররা কোটি-কোটি বছর ধরে বিলুপ্ত হয়নি - এক সেই উল্কাপাতে তারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া আগে৷ ও হ্যাঁ, তাদের মেটাবলিজমও ছিল মন-মেজাজের সঙ্গে খাপ রেখে: মামেঙ্কিসরাস নামের এক ডাইনোসর মিনিটে নিশ্বাস নিতো মাত্র ছ'বার, যেখানে হাতিরা নিশ্বাস নেয় মিনিটে ৭২ বার৷
একটা নেংটি ইঁদুর মিনিটে ক'বার নিশ্বাস নেয় জানেন? ৭০০ বার৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম