ডিএনএ টেস্টে দুর্বলতা
৪ নভেম্বর ২০১৩গত ২৪শে এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে ১,১৩৪ জন নিহত হন৷ তাঁদের মধ্যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা ৩২২ জনের ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডিএনএ ল্যাবরেটরি৷ ডিএনএ ল্যাবের প্রধান ড. শরীফ আখতারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে জানান, এর মধ্যে ১৫৭ জনের ডিএনএ ‘প্রোফাইল' তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিলেছে৷ কিন্তু বাকি ১৬৫ জনের ডিএনএ এখনও তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মেলেনি৷
তিনি জানান, তারা প্রতিটি মৃতদেহের দাঁত ও হাড়ের নমুনা থেকে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করেছেন৷ তারপর তাঁদের আত্মীয় বলে দাবি করা ৪৫০টি পরিবারের মোট ৫৪৮ জন তাঁদের রক্তের যে নমুনা জমা দিয়েছেন, তা থেকে আত্মীয়স্বজনের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে৷ নিহতদের ডিএনএ-র সঙ্গে তাঁদের ডিএনএ মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১৫৭ জনের পরিচয় জানা গেছে৷ তবে বাকিদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ এর মানে হলো, তাঁদের ডিএনএ-র সঙ্গে কারুর ডিএনএ মেলেনি৷ ড. আখতারুজ্জামান জানান, ডিএনএ নমুনা নেয়ার ক্ষেত্রে তারা মা-বাবা এবং ভাই-বোনকে প্রাধান্য দিয়েছেন৷ এই ডিএনএ পরীক্ষায় এফবিআইএ-র একটি সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
অধ্যাপক শরীফ আখতারুজ্জামান জানান, তাদের কাছে মনে হয়েছে কিছু ডিএনএ পরীক্ষায় বেশ কিছু দুর্বলতা থাকতে পারে৷ তাই তারা সেগুলো চিহ্নিত করে আবারো মিলিয়ে দেখবেন৷ তাতে হয়ত নতুন কিছু অজ্ঞাতের পরিচায় জানা যেতে পারে৷ তবে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না৷
ঢাকার জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে জানান, সনাক্ত হওয়া ১৫৭ জনের তালিকা তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন৷ এই ১৫৭ জনের আত্মীয়স্বজনকেও জানানো হয়েছে৷ তাঁরা এখন জুরাইন কবরস্থানে গিয়ে তাঁদের ডিএনএ নাম্বার দিয়ে নিহতদের কবর সনাক্ত করতে পারবেন৷ কারণ, প্রতিটি কবরেই ডিএনএ নাম্বার দেয়া আছে৷ প্রসঙ্গত, অজ্ঞাত পরিচয় সবাইকে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়৷
যাঁদের পরিচয় সনাক্ত হয়েছে, তাঁদের পরিবারের লোকজন এখন আর্থিক সহায়তা পাবেন কিনা জানতে চাইলে ঢাকার জেলা প্রশাসক জানান, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সিদ্ধান্ত নেবে৷ যাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি তাঁদের ব্যাপারে আর কোনো করণীয় আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্টেও পরিচয় জানা না গেলে আর কিছুই করার নেই৷
উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসে নিহতদের প্রায় সকলেই ছিলেন পোশাক শ্রমিক৷