ড্রেসডেন শহরে চলছে প্রোটেস্ট্যান্ট সম্মেলন
৩ জুন ২০১১ড্রেসডেন শহরে ১লা থেকে ৫ই জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩৩তম প্রোটেস্ট্যান্ট সম্মেলন৷ হাজার-হাজার মানুষের ঢল নেমেছে এই শহরে৷ ধর্ম সম্পর্কে তাত্ত্বিক আলোচনা নয়, বর্তমানে যেসব বিষয় মানবজাতিকে বিশেষভাবে ভাবিয়ে তুলেছে, ধর্মের কাঠামোর মধ্যে সেসব বিষয় সম্পর্কে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন উপস্থিত মানুষজন৷ উদ্বোধনী ভাষণে জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ বলেন, বার্লিন প্রাচীর পতনের প্রায় ২২ বছর পর পূবের ড্রেসডেন শহরে যে আদৌ এমন ধর্মীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তার এক বিশাল তাৎপর্য রয়েছে৷ স্বৈরচারী কমিউনিস্ট শাসকরা ধর্ম পালনের স্বাধীনতা না দিলেও প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বীরা নানা বাধা সত্ত্বেও ঠিকই সক্রিয় ছিলেন৷ সেখান থেকেই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়েছিল, পতন হয়েছিল স্বৈরচারী শাসনের৷ তবে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও সম্প্রীতির আহ্বান জানিয়েছেন ভুল্ফ৷ তাঁর মতে, খ্রিষ্টানরা অতীতের বিভাজন ভুলে এই পথেই চলতে চায়৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আজকের এই বিশ্বায়নের যুগে পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া টিকে থাকার কোনো উপায়ই নেই৷ তাই সমাজকে খোলা মনে ভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি ও মতামত মেনে নিতে হবে৷ বিশেষ করে জার্মান সমাজে বিদেশি অভিবাসীদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টি তুলে ধরেন ভুল্ফ৷
ড্রেসডেন'এর এই সম্মেলনে সত্যি সংলাপের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে৷ প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মের প্রতিনিধিরা এবার ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিশেষ আগ্রহ দেখাচ্ছেন৷ তবে ভদ্রতা দেখিয়ে কোনো অপ্রিয় প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন না তাঁরা৷ এভাবেই ভুল-বোঝাবুঝির মূলে আঘাত করা সম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা৷ এই প্রক্রিয়া অবশ্য গত কয়েক বছর ধরেই চলে আসছে৷ হিংসা, গণতন্ত্র বা নারীর অধিকার সম্পর্কে দুই শিবিরের অবস্থান সবসময়ে মিলছে না৷ ইসলামি দেশগুলিতে অন্য ধর্ম পালনের অধিকার নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে৷
শুধু ইসলাম ধর্ম নয় – প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মীয় কাঠামোর মধ্যে ইদানিং যেসব বিতর্কিত বিষয় খ্রিষ্টানদের আলোড়িত করেছে, বাদ যাচ্ছে না সেসব অপ্রিয় বিষয়ও৷ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের উপর যৌন-পীড়ন নিয়ে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, তারও প্রতিফলন ঘটছে সম্মেলনে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ