ঢাকা যাওয়ার কথা নরেন্দ্র মোদীর
২ মার্চ ২০২১আগামী ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা যেতে পারেন বলে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে। ২৬ তারিখ ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে নতুন একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালু হওয়ার কথা। উত্তরবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা পর্যন্ত এই নতুন ট্রেন চালু হওয়ার কথা। সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে সেই ট্রেনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করতে পারেন মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৭ মার্চ গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে তার যাওয়ার কথা। ওই একই দিনে গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মতুয়া ধর্মমতের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতেও মোদী যেতে চান বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে মোদী ঢাকা যেতে পারেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা আগামী ৪ মার্চ। ওই দিন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ঢাকা যাওয়ার কথা। সেখানেই মোদীর সফর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের ভোটের মরসুমে মোদী ঢাকা সফরকে রাজনৈতিক ভাবেও ব্যবহার করতে চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গের একটি অংশে বিপুল সংখ্যক মতুয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়ার মতো জায়গায় মতুয়া ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর। এই পরিস্থিতিতে মতুয়ার ধর্মমতের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়ি দেখতে চান মোদী। সেখানে গেলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়কে একটি বার্তা দিতে পারবেন তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ আসনে বিজেপি জিতেছিল। সেখানকার সাংসদ মতুয়া পরিবারের সদস্য শান্তুন ঠাকুর। কিন্তু বিধায়ক তৃণমূলের মমতা ঠাকুর। তিনিও মতুয়া পরিবারের সদস্য। লোকসভা ভোটের পরে বিজেপি এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে যখন অগ্রসর হয়, তখন মতুয়াদের মধ্যে বিজেপি বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মাঝে মতুয়াদের আপত্তির কারণে বনগাঁয় বিজেপির সভাও বাতিল করতে হয়েছিল। ফলে এবারের নির্বাচনে নতুন করে মতুয়াদের মন পেতে চাইছে বিজেপি। এবং সে কারণেই মোদী হরিচঁদ ঠাকুরের জন্মস্থানে যেতে চান বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। সেখানে মোদীর সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরও যেতে পারেন বলে শোনা গেছে। এ বিষয়ে শান্তনু ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''যাওয়ার কথা আছে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না।''
মোদী চাইলেও বাংলাদেশ প্রশাসন মোদীকে সেখানে নিয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মভিটে অত্যন্ত জনবহুল অঞ্চল। সেখানে মোদীর কনভয় আদৌ নিয়ে যাওয়া যাবে কি না, নিরাপত্তার সমস্ত ব্যবস্থা করা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, গত সোমবার নয় সদস্যের এক প্রতিনিধি দল সেখানে গিয়ে এলাকা দেখে এসেছে।
এছাড়াও বরিশালের শিকারপুরে সুগন্ধা শক্তিপীঠ দেখার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন মোদী। যেতে চেয়েছেন কুষ্ঠিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িতেও।
২৭ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন শুরু হচ্ছে। আট দফার ভোট শেষ হবে ২৯ এপ্রিল। এই সময়ে মোদীর ঢাকা সফর এবং হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে যেতে চাওয়া, রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি দেখতে চাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি কোথায় কোথায় যেতে পারবেন, তা ৪ তারিখের পরেই জানা যাবে।