ঢাকায় শীতের পোষাক ও উদযাপন
পৌষ মাসের আগমনী বার্তায় রাজধানী ঢাকায় শীতের প্রকোপ শুরু হয়েছে। কেনাকাটা বেড়েছে শীতের পোষাকের। ঢাকায় কিভাবে শীতের আগমনকে বরণ করছেন সাধারণ মানুষ, দেখুন ছবিঘরে।
কোট ও ব্লেজারের বিক্রি ভালো
ঢাকার গুলিস্তান ও পল্টনের ফুটপাতের দোকানগুলোতে সকাল থেকেই পথচারীদের ভিড়। বিক্রেতারা জানান, ছয়শ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে পোষাকগুলো।
কম্বল দাম ও চাহিদা
ঢাকার কম্বলের অন্যতম পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দেশি-বিদেশি কম্বলের সমান চাহিদা রয়েছে। বিদেশি কম্বল মূলত দুবাই, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, সৌদি আরব, ভারত, স্পেন থেকে আসছে। আকারভেদে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে আড়াই থেকে ১২ হাজার টাকায়।
যত শীত তত বিক্রি
ঢাকার গুলিস্তানের পাইকারি ও খুচরা কম্বল বিক্রেতা রকিবুল ইসলাম মনে করেন, ঢাকায় ৩-৪ বছর পর পর শীত তীব্র হয়। গত কয়েক বছরে তেমন শীত না পড়ায় এবার শীত বেশি পড়ার আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, যত বেশি শীত, আমাদের ব্যবসা তত ভালো।
কমফোর্টারে আরাম
ঢাকার গুলিস্তানের পাইকারি ও খুচরা কম্বলের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কিছু দোকানে কমফোর্টার বিক্রি হচ্ছে। পুরান ঢাকা থেকে কমফোর্টার কিনতে আসা সেলিনা পারভীন বলেন, কম্বলের চাইতে এর আরাম বেশি। তবে বিক্রেতারা দাম অনেক বেশি চাইছেন।
দামে ও পছন্দে মিলছে না
ক্রেতারা জানান, এবারের শীতের পোষাকের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি। যেটা পছন্দ হচ্ছে, সেটা দামে মিলছে না। আবার যেটার দাম নাগালের মধ্যে, সেই পোশাকের মান পছন্দ হচ্ছে না।
কেনাকাটায় পিছিয়ে নেই পুরুষরা
ঢাকায় ফুটপাত, মার্কেট, শপিং মলে নারী ক্রেতাদের পাশাপাশি চোখে পড়ছে পুরুষ ক্রেতাদেরও। মূলত তাঁরা নিজেদের জন্যই শীতের পোশাক কিনতে আসছেন।
ফুটপাতে একদাম
ঢাকার গুলিস্তান, পল্টন, ফার্মগেটের ফুটপাথে শীতের কাপড় বিক্রি করছে এমন দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে অধিকাংশ দোকানেই “এক দাম” এ শীতের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। দামদর করার ঝামেলা এড়াতে সীমিত লাভে বিক্রেতারা পোষাকগুলো বিক্রি করছেন বলে দাবি তাদের।
শীতে বাড়ে জুতার চাহিদা
ঢাকার গুলিস্তানের জুতা বিক্রেতা মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, “গরমের সিজনে স্যান্ডেল আর শীতে বাড়ে জুতার চাহিদা। এখন তাই জুতার দামও কিছুটা বেশি।“
চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে চলছে ব্যবসা
ঢাকার শীতের পোশাকের অন্যতম বড় খুচরা বাজার গুলিস্তানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলাচলের একটি রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে কেনাবেচা করছেন বিক্রেতারা। রাস্তাটিতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়ের কারণে আশেপাশের সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের।
অভিজাত দোকানে ভিড় কম
ঢাকার ধানমন্ডির অভিজাত দোকান ও শপিং মলগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে এখনো শীতের পোশাক বিক্রি জমে উঠেনি। তবে শীত বাড়ার সাথে সাথে বিক্রি বাড়ার ব্যাপারেও আশাবাদী বিক্রেতারা।
ফ্যাশন হাউজগুলোর স্টাইলিশ কালেকশন
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, রাপা প্লাজাসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো ঘুরে দেখা যায়, সেখানে শীতের জন্য স্টাইলিশ ও এক্সক্লুসিভ সব কালেকশন আনছেন তাঁরা। ক্রেতাদের সাড়াও পাচ্ছেন ভালো।
এলাকাভিত্তিক মৌসুমি ব্যবসা
ঢাকার মিরপুরের আগারগাঁও, কাজীপাড়া, তালতলা এলাকাগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে এলাকাভিত্তিক ব্যবসায়ীরা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন। তাঁরা জানান, সারা বছর অন্যান্য পণ্যের ব্যবসা করলেও শীতের মৌসুমে তাঁরা শীতের পোশাকই বিক্রি করেন।
ভোরে শীত বেশি
প্রতিদিন ভোরে কাজে বেরিয়ে পড়তে হয় মিরপুরের বাসিন্দা আফজাল হোসেনকে। তিনি বলেন, মাঝ রাত থেকে ভোরের সময়টা পর্যন্ত কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা থাকে বেশি। মূলত এ সমইয়টাতে একাধিক শীতের পোশাক গায়ে না জড়ালে টেকা মুশকিল।
শীতের আকর্ষণ গুড়
বাংলাদেশে শীতের অন্যতম আকর্ষণ গুড়। আখের গুড় প্রায় সারা বছর পাওয়া গেলেও খেজুর গুড়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে শীতের মৌসুমে। ছবিতে ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জে এক গাছির বাসায় খেজুরের রস থেকে গুড় প্রস্তুত করতে দেখা যাচ্ছে।
নানা স্বাদের পিঠা
শীতের মৌসুমে বিভিন্ন ভ্রাম্যমাণ দোকানে নানা স্বাদের ঝাল ও মিষ্টি পিঠা বিক্রি করতে দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ডিম পিঠা, পাকন পিঠা, তেল পিঠা, চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, পুলি পিঠা ইত্যাদি। দাম সাধ্যের মধ্যে হওয়ায় দোকানগুলোতে এসব পিঠার চাহিদাও থাকে বেশ।