পদ্মা সেতু
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১২প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ বিশ্বব্যাংকের কাছে থাকলে তারা ঐ প্রকল্পে ফিরতো না৷ বিরোধীপক্ষের কাছে এ যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা বলা শক্ত৷ তবে বিশ্বব্যাংকের ‘‘ফিরে আসা''-টাকেই ‘‘বেশ কিছুটা নজিরবিহীন'' বলে মনে করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস'এর গবেষণা পরিচালক ড. বিনায়ক সেন৷''
‘‘কিন্তু ফিরে আসার মানে এই নয় যে, দুর্নীতি সংক্রান্ত যে অভিযোগগুলো তারা করেছিল, সেগুলো তামাদি হয়ে গেছে৷'' দুদকের বিবৃতি উল্লেখ করে ড. সেন বলেন যে, তদন্ত আবার নতুন করে শুরু হবে এবং বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য দাতা সংস্থারা তাতে জড়িত থাকবে৷ ‘‘সুতরাং তদন্তও চলবে, কিন্তু একই সাথে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটা থেমে থাকবে না৷
বিনায়ক সেন জানালেন যে কয়েক মাস আগে তিনি একটি সাক্ষাৎকারে ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন যে, তদন্ত চলতে থাকুক, কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটাকে বিলম্বিত করা উচিত নয়, কেননা তার ফলে ‘রিসোর্স কস্ট' বেড়ে যাবে এবং ‘‘তাতে আখেরে আমাদেরই ক্ষতি হবে''৷ ইতিমধ্যেই প্রকল্পের মোট খরচ ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে তিন বিলিয়ন ডলার ধরা হচ্ছে, বলে জানালেন ড. সেন৷''
‘জনগণের ফান্ড' প্রসঙ্গে ড. সেন বললেন, বিশ্বব্যাংক সরে দাঁড়ানোর পর দেশের বিশেষজ্ঞরাই হিসেব করে দেখিয়েছিলেন যে, এক বিলিয়ন ডলার পরিমাণ স্থানীয় অর্থায়ন যোগাড় করতে পারলে, বিদেশি ও প্রবাসি বাংলাদেশি বিনিয়োগকারিদের সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়াই পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব৷ কিন্তু এখন বিদেশি অর্থায়ন নিশ্চিত হবার পরে সরকার আর সে পথে যাবেন কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করেন ড. সেন৷
পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে আমরা কি আশা করতে পারি, সে প্রশ্নের জবাবে ড. সেন যমুনা সেতুর কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন৷ বললেন, যমুনা সেতুর আগে পশ্চিমাঞ্চল অনেকটা পিছিয়ে ছিল৷ বিআইডিএস সহ বিভিন্ন মূল্যায়ন থেকে দেখা গেছে যে, যমুনা সেতুর পরে পশ্চিমাঞ্চলের অগ্রগতি অনেক দ্রুত হয়েছে এবং সেটা দারিদ্র্যের পরিসংখ্যানেও দেখা যায়৷ সুতরাং আশা করা যায়, দক্ষিণাঞ্চল যে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, তার সঙ্গেও এক ধরণের ইন্টিগ্রেশন বা যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে এবং দ্রুত অবকাঠামোগত বিকাশ হবে৷
সাক্ষাৎকার: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ