তারকা খেলোয়াড়দের দল-বদল
ইউরোপে এখন গ্রীষ্মকাল৷ ঋতু পরিবর্তনের এ সময়ে ইউরোপীয় ফুটবলে শুরু হয় খেলোয়াড়দের ক্লাব বদল৷ ইউরোপীয় ফুটবলের আলোচিত দল-বদল নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো: রেয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাস
তার না্মের সাথে জড়িয়ে ছিল ক্লাবটির নাম৷ অর্থাৎ রোনাল্ডো বললেই রেয়ালের নাম মনে পড়ত ভক্তদের৷ কিন্তু এখন থেকে জুভেন্টাসের সঙ্গে তার নাম উচ্চারিত হবে৷ ১০ কোটি ইউরো খরচ করে জুভেন্টাস দলে টেনেছে পর্তুগালের এই তারকাকে৷
নেইমার: বার্সেলোনা থেকে পিএসজি
২০১৭ সালের আগস্টে বার্সেলোনা থেকে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইন বা পিএসজিতে যোগ দেন নেইমার৷ এজন্য ক্লাবটিকে গুণতে হয়েছে ২২ কোটি ইউরো৷ বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি তারকা এখন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা৷
লুইস সুয়ারেজ: লিভারপুল থেকে বার্সেলোনা
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের হয়ে যেমন মাঠ মাতিয়েছেন, বিশ্বকাপে উরুগুয়ের হয়েও সেরকমই খেলছিলেন সুয়ারেজ৷ কিন্তু বেশি আলোচনা হয়েছে ইটালির খেলোয়াড় জর্জো কিয়েলিনিকে কামড়ানো নিয়ে৷ পিঠ কামড়ানোর অপরাধে নয়টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে তাঁকে নিষিদ্ধ করে ফিফা৷ তারপরও সুয়ারেজের কদর কমেনি৷ বছরের সর্বোচ্চ ৮১ মিলিয়ন ইউরো, অর্থাৎ ১০৮ দশমিক ১ মিলিয়ন ডলার খরচ করে তাঁকে লিভারপুল থেকে দলে টেনেছে বার্সেলোনা৷
হামেস রডরিগেস: মোনাকো থেকে রেয়াল মাদ্রিদ
ব্রাজিল বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় চমক হামেস রডরিগেস৷ কলম্বিয়ার এই ফরোয়ার্ড ছয়টি গোল করে হয়েছেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা৷ জিতে নিয়েছেন ‘গোল্ডেন বুট’ পুরস্কার৷ এসব সুবাদেই আসে ফ্রান্সের মোনাকো ক্লাব ছেড়ে স্পেনের রেয়াল মাদ্রিদে যাওায়ার সুযোগ৷ ঠিক কত খরচ করে ২২ বছরের এই তরুণকে নিয়েছে তা জানায়নি রেয়াল৷ তবে টাকার অঙ্কটা যে খুব বড় সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷
টনি ক্রুস: বায়ার্ন থেকে রেয়াল মাদ্রিদ
জার্মানির নতুন প্রজন্মের অন্যতম সেরা প্রতিভা টনি বা টোনি ক্রুস এবার বায়ার্ন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ জার্মানির ইতিহাসের সফলতম ক্লাব থেকে স্পেনের সবচেয়ে সফল ক্লাব রেয়াল মাদ্রিদে যাচ্ছেন তিনি৷ ট্র্যান্সফার ফি হিসেবে মাত্র ৩০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে এমন এক ফুটবলারকে পেয়ে রেয়াল কর্মকর্তারা নিশ্চয়ই খুশি৷
ডাভিড লুইস: চেলসি থেকে পারি সাঁ জ্যার্মা
ব্রাজিলের ডাভিড লুইসকে এবার ছেড়ে দিয়েছে চেলসি৷ গত মৌসুমে ২৭ বছর বয়সি এই ডিফেন্ডারের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার অভাব ছিল সুস্পষ্ট৷ দেশের হয়ে এবারের বিশ্বকাপেও ভালো খেলেননি ডাভিড লুইস৷ তাই ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের পারি সাঁ জ্যার্মা বা পিএসজি ক্লাব তাঁকে ৫০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে নিতে চাইলে আপত্তি করেনি চেলসি৷
দিয়েগো কস্তা: অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে চেলসি
দিয়েগো কস্তা জন্মসূত্রে ব্রাজিলিয়ান হলেও খেলছেন স্পেনের হয়ে৷ স্প্যানিশ লিগ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত মৌসুমটা দারুণ কেটেছে তাঁর৷ বার্সা, রেয়ালকে হতাশ করে স্প্যানিশ লিগ জিতেছে অ্যাটলেটিকো৷ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে অবশ্য রেয়ালের কাছে হেরে গেছে৷ তবু দিয়েগো কস্তার পারফরম্যান্স সবার নজর কেড়েছে৷ সুবাদে এবার অ্যাটলেটিকো ছেড়ে চেলসিতে নাম লিখিয়েছেন কস্তা৷ তাঁকে পেতে ৩৮ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে চেলসি৷
মারিও মাঞ্জুকিচ: বায়ার্ন থেকে অ্যাটলেটিকো
দিয়েগো কস্তার শূন্যস্থান পূরণ করতে বায়ার্ন মিউনিখ থেকে মারিও মাঞ্জুকিচকে নিয়েছে অ্যাটলেটিকো৷ ক্রোয়েশিয়ার এই ফরোয়ার্ডের জন্য তাদের খরচ হয়েছে ২২ মিলিয়ন ইউরো৷
আলেক্সিস সানচেজ: বার্সেলোনা থেকে আর্সেনাল
বিশ্বকাপে চিলির হয়ে চমৎকার খেলার পুরস্কার পেতে আলেক্সিস সানচেজের (লাল জার্সি) বেশি দেরি হয়নি৷ বার্সেলোনার চেয়ে চেলসি হয়ত বড় ক্লাব নয়, তবে নিয়মিত খেলার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা ভাবলে সানচেজের এই দলবদলকে ইতিবাচক বলতেই হবে৷ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, চিলির এই ফরোয়ার্ডের জন্য ৩৭ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে চেলসি৷
চিরো ইমোবিলে: টোরিনো থেকে ডর্টমুন্ড
এ মৌসুমে সবচেয়ে বড় অঙ্কের ট্র্যান্সফার ফি-তে বুন্ডেন্স লিগায় যোগ দেয়া খেলোয়াড় চিরো ইমোবিলে৷ ইটালির টোরিনো থেকে তাঁকে নিতে২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে ডর্টমুন্ড৷ বুন্ডেসলিগার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ট্র্যান্সফার ফি-র রেকর্ডটা এখনো বায়ার্ন মিউনিখের৷ ২০১২ সালে সাবি মার্তিনেসের জন্য ৪০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছিল তারা৷
নূরি শাহীন: রেয়াল মাদ্রিদ থেকে ডর্টমুন্ড
আবার ডর্টমুন্ডের হলেন নূরি শাহীন৷ বুন্ডেসলিগার এই ক্লাব থেকেই ফেইনুর্দ হয়ে রেয়ালে গিয়েছিলেন শাহীন৷ কিন্তু সেখানে খেলার সুযোগ তেমন একটা পাননি৷ ফেইনুর্দ ধারে খেলতে দিয়েছিল রেয়ালে৷ পরে লিভারপুলে খেলেছেন ধারে, এমনকি ডর্টমুন্ডও ধার হিসেবে নিয়েই খেলিয়েছে তুর্কি এই ফুটবলারকে৷ তবে এবার আর নিজের পুরোনো দলে ধারে খেলতে আসছেন না, ৭ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তাঁকে রেয়াল থেকে ফিরিয়ে এনেছে ডর্টমুন্ড৷
গিলিয়ের্মো ওচোয়া: আইয়াচ্চো থেকে মালাগা
বিশ্বকাপে এবার মেক্সিকোর গোল পোস্টের নীচে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ওচোয়া৷ অনেকের মতে এ আসরের সেরা গোলরক্ষকও তিনি৷ বিশ্বকাপ মাতানো এই গোলরক্ষক এবার অচেনা ক্লাব আইয়াচ্চো থেকে যাচ্ছেন স্পেনের ক্লাব মালাগায়৷ তাঁকে পেয়ে মালাগা খুব খুশি৷ ফ্রি ট্র্যান্সফার, অর্থাৎ বিনে পয়সায় এমন এক ফুটবলারকে পেয়েছে তারা৷ খুশি তো হবেই!