ওবামার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ওবামা মঙ্গলবার তাঁর স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন ভাষণে জানান, ২০১৩ সালে ৩৪ হাজার, এবং ২০১৪'য় আরো বেশি সৈন্যাপসারণ করা হবে৷ কিন্তু ২০১৪'র পরে কী পরিমাণ মার্কিন সৈন্য আফগানিস্তানে থাকবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি, সম্ভবত সে বিষয়ে আফগান সরকারের সঙ্গে এখনও কথাবার্তা চলছে বলে৷ সে ক্ষেত্রে ঐ মার্কিন সৈন্যরা আফগান আইনের আওতায় পড়বে কিনা, তাদের সেই আইন অনুযায়ী বিচার করা চলবে কিনা, সে'সব প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে৷ অথচ কোনো আলাদা চুক্তি ছাড়া মার্কিন সৈন্যরা ২০১৪ সালেই সদলবলে আফগানিস্তান ছাড়বে, যেমন তারা ২০১১ সালে ইরাক থেকে বিদায় নিয়েছিল৷ মুশকিল এই যে, মার্কিনিরা আফগানিস্তান ছাড়লে বাদবাকি ন্যাটো সৈন্যদের আফগানিস্তানে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই৷
ওবামা সৈন্যাপসারণ সংক্রান্ত ঘোষণা দেবার আগে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই'এর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে নিয়েছেন৷ কাজেই কারজাই সরকার যে ওবামার ঘোষণাকে স্বাগত জানাবেন, তা'তে আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷ আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জনান মুসাজাই বলেছেন, ‘‘আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে যে, আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সারা দেশে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার মতো অবস্থায় থাকবে৷''
২০১৪ সালের পরে মার্কিন সৈন্যদের অবস্থান সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনাও ‘‘ইতিবাচক ও গঠনমূকভাবে'' এগোচ্ছে বলে মুসাজাই জানান৷ অপরদিকে তালেবান বিদ্রোহীরা এ'বছরের মধ্যে ৩৪ হাজার মার্কিন সৈন্যের অপসারণকে পর্যাপ্ত বলে মনে করে না৷ তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও বাকি সব জবরদখলি দেশের এই যুদ্ধের বাস্তবতা উপলব্ধি করার সময় এসেছে৷''
‘‘তাদের যতো শীঘ্র সম্ভব দেশ ছাড়তে হবে এবং আফগানিস্তানে জবরদখলের অবসান ঘটাতে হবে, কেননা একমাত্র তাদের পশ্চাদপসারণের পরেই আফগান সমস্যাগুলির সমাধান হওয়া সম্ভব এবং আফগানরা নিজেরাই সে সব সমস্যার সমাধান করবে,'' বলেন মুজাহিদ৷
আফগান জনগণের প্রতিক্রিয়া সম্ভবত কিছুটা আলাদা৷ ড্রডাউনের কথা বহুদিন আগে থেকে জানা থাকলেও, এই প্রথম মার্কিন তরফ থেকে কোনো সংখ্যার কথা বলা হয়েছে৷ বহু আফগান উপলব্ধি করছেন যে, বিদেশি সৈন্যরা সত্যিই আফগানিস্তান ছাড়ছে৷ তবে তার একটা ভালো দিকও আছে বৈকি৷ এই বুধবারেই কুনার প্রদেশের গভর্নর জানিয়েছেন যে, সেখানে বিদ্রোহীদের উপর ন্যাটোর একটি বিমানহানায় চারজন মহিলা ও চারটি শিশু নিহত হয়েছে৷
এসি / এসবি (ডিপিএ, এপি)