তালেবান এলাকায় পর্নো ছবি!
২৫ ডিসেম্বর ২০১৩পেশাওয়ারের ‘শামা' সিনেমা হলের নাম জানেন না এমন মানুষ পাকিস্তানে খুঁজে পাওয়া মুশকিল৷ এক সময় ১৫টি সিনেমা হল ছিল তালেবান অধ্যুষিত শহরটিতে৷ ভিডিও, ডিভিডির আগমনের ফলে সারা পাকিস্তানে চলচ্চিত্র ব্যবসায় ভাটার টান লেগেছে৷ অনেক হলই বন্ধ হয়ে গেছে৷ পেশাওয়ারেও বন্ধ হয়েছে আটটি হল৷ তাই ২০ বছর আগে যেখানে ছিল ১৫টি হল, এখন সেখানে টিকে আছে মাত্র সাতটি৷
সাতটির মধ্যে তিনটিতে ব্যবসা বেশ রমরমা৷ বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সেই তিনটি প্রেক্ষাগৃহে প্রতিদিন পর্নো ছবি চলে বলেই মন্দার ঢেউ সেখানে লাগছে না৷ তিনটির মধ্যে ‘শামা'য় প্রতিদিন জমে শত লোকের ভিড়৷ সাধারণ সিনেমার জন্য নির্ধারিত দামের তিন-চারগুন বেশি দামেও টিকিট কেটে সমাজের প্রায় সব পেশার মানুষই যান স্থানীয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের যৌনতার দৃশ্য দেখতে৷
‘দোস্তানা' নামের একটি ছবিকে রীতিমতো লুফে নিয়েছে পেশাওয়ারের মানুষ৷ একটি ছাগলের বাজার আর বাস স্ট্যান্ডের মাঝের ছোট্ট পথ ধরে লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক মানুষ গিয়ে ঢুকে পড়ছেন সিনেমা হলে৷ ‘দোস্তানা' তৈরি হয়েছে স্থানীয় এক যুবককে ঘিরে৷ যুবকটি বিয়ে করবেন৷ তিনি চান তাঁর প্রেমিকাকে বিয়ে করতে৷ তবে পরিবার চায় বিয়েটা হোক ছেলেটির এক খালাতো বোনের সঙ্গে৷ চাপের মুখে যুবকটি এক সময় সিদ্ধান্ত নেন ‘কে বেশি ভালো' – তা যাচাই করেই বিয়ে করবেন৷ তারপর থেকেই শুরু হয় দুই তরুণীর সঙ্গে যুবকটির খুব ঘনিষ্ঠ এবং খোলামেলা দৃশ্য৷ ‘দোস্তানা'য় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন পাকিস্তানের সাধারণ ঘরের অখ্যাত এক ছেলে৷ দুই তরুণী চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রীদেরও নেই অভিনয়ের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা৷ দর্শকরা তবুও খুশি৷
অখ্যাত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে তৈরি পর্নো ছবি দেখে তাঁরা খুশি কেন? বার্তা সংস্থা এএফপি দর্শকদের প্রশ্ন করে জেনেছে, পেশাওয়ারের মানুষ চায় নিজেদের মতো কাউকেই যৌন দৃশ্যে দেখতে৷ ইউটিউবে কিংবা সিডি-ডিভিডিতে তো বিদেশি পর্নো অনেক দেখা যায়৷ সেই তুলনায় পাকিস্তানি পর্নো নেই বললেই চলে৷ তাই পাকিস্তানের মানুষ চায় স্বদেশি যৌনদৃশ্য দেখতে৷ এএফপিকে পেশাওয়ারের তরুণ খালিক বলেছেন, ‘‘আমি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ‘দোস্তানা' দেখলাম৷ এখানকার অনেক মানুষের মতো আমিও এমন ছবিতে পাকিস্তানের মেয়েদেরই দেখতে চাই৷ পাকিস্তানি মেয়েদের দেখে শৌখিন এবং বাস্তবসম্মত মনে হয়৷''
এসিবি/জেডএইচ (এএফপি)