আরেকটি ‘কালো আইন'!
৭ অক্টোবর ২০১৩পাস হওয়া এই বিলটির ৫৭ নম্বর ধারা নিয়ে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছিল৷ এ বছরের ১৯ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদিত হওয়ার পর ব্লগার আরিফ জেবতিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমএ ২৭ আগস্ট তারিখে ‘আরেকটি কালো আইনের হাতছানি' শীর্ষক একটি বিশ্লেষণধর্মী লেখা লেখেন৷ এই লেখায় ৫৭ নম্বর ধারাটি পুরোটাই তুলে দেয়া হয়েছে৷ এই ধারাতে আছে, ‘‘ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মিথ্যা ও অশ্লীল কিছু প্রকাশ করলে এবং তার কারণে মানহানি, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগলে বা কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়া হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে৷''
আরিফ জেবতিক লিখেছিলেন, ‘‘এ আইনে গুরুত্বপূর্ণ যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেটি হচ্ছে এ অপরাধে এখন পুলিশ পরোয়ানা ছাড়াই কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে৷ পুলিশের গ্রেফতার-বাণিজ্য সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তারা জানেন পুলিশের এ ক্ষমতা দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষের উপর কত বড় ঝুঁকির সুযোগ তৈরি করবে৷''
জেবতিকের শেষ লাইনটি ছিল এরকম, ‘‘এ বিশ্বায়নের যুগে ইন্টারনেট ব্যবহারে অপ্রয়োজনীয় কড়াকড়ির এ আইন আমাদের ইতিহাসে আরেকটি ‘কালো আইন'-এর নমুনা হিসেবেই চিহ্নিত হবে ভবিষ্যতে৷''
এখন যখন বিলটি পাস হলো তখন জেবতিক তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘তথ্য প্রযুক্তি আইন পাস হয়েছে৷ ৫৭ ধারা বলবৎ৷ দারোগা বাবু চাইলেই আপনাকে গারদে পুরে ফেলতে পারবেন অজামিনযোগ্য ধারায়৷''
মোবাশ্বার হাসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এই বিল একটা পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে: বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ যারাই সরকারে থাকুক না কেন তাদের সমালোচনা করো না৷''
আজাদ মাস্টার লিখেছেন, ‘‘যা বুঝলাম বাংলাদেশের মধ্যে থেকে অনলাইনে বাংলায় স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ চর্চার কবর খুড়া হলো৷'' সাইফুর রহমান ইমতিয়াজ লিখেছেন, ‘‘ভাই বিদেশ যাইতে মুঞ্চায়৷ দেশে থাইকা আর কিছু কওয়ার অবস্থা নাই৷ কোন সময় পুলিশ বাবাজীরা আবার শ্বশুরবাড়ির দাওয়াত দেয়৷''
তবে লিংকন হুসেইন আইনের কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ধুর এত ভয় পাইলে চলবে? জাল ভোট দিলে ২ বছরের জেল!! কিন্তু বাস্তবে ২ দিনেও জেল হয় না৷ এইটা বাংলাদেশ, কোন আইনটা কার্যকর হয়েছে একটু বলবেন?''
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ