1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তাহিতি বনাম স্পেন: এক আজব খেলা

২১ জুন ২০১৩

তাহিতি হারল ১০-০ গোলে৷ তাও স্পেনের ‘বি’ টিমের কাছে৷ ‘এ’ টিম নামলে হয়ত ১৫ অথবা ২০ গোলে দাঁড়াতো৷ কিন্তু ফুটবল দুনিয়া এদিন বিশ্ব বাছাই তালিকায় ১৩৮ নম্বর তাহিতির দিকেই ছিল, পয়লা নম্বর স্পেনের দিকে নয়৷

https://p.dw.com/p/18tpd
RIO DE JANEIRO, BRAZIL - JUNE 20: Fernando Torres of Spain goes past Mickael Roche of Tahiti on his way to scoring his team's third goal during the FIFA Confederations Cup Brazil 2013 Group B match between Spain and Tahiti at the Maracana Stadium on June 20, 2013 in Rio de Janeiro, Brazil. (Photo by Alexandre Loureiro/Getty Images)
ছবি: Getty Images

বৃহস্পতিবার রিও ডি জেনিরোতে দশ লাখ প্রতিবাদী মানুষের মিছিল: ব্রাজিলের রাজনীতি ও সমাজে ব্যাপক পরিবর্তনের দাবিতে, শুধু বাস-ট্রামের টিকিটের দাম কমানোর দাবিতে নয়৷ ওদিকে প্রখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে তখন ফুটবলে ধনি-দরিদ্র অসাম্যের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ চলছে৷ সত্তর হাজার দর্শক জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সুদূর প্রশান্ত মহাসাগরের এক দ্বীপ থেকে আসা একদল অপেশাদারি খেলোয়াড়ের পিছনে কলরোলের মতো দাঁড়িয়ে: স্পেন যাই করুক, ‘দুয়ো, দুয়ো'; তাহিতি বল ছুঁলেই ‘সাবাস, সাবাস'৷

ব্রাজিলিয়ানরা নিজেরাই সমুদ্র সৈকত, গান-বাজনা-নাচ, উৎসব-মোচ্ছবের ভক্ত৷ তাহিতির এই অপেশাদারি ফুটবলাররা যেভাবে হোটেলে রঙচঙে শার্ট পরে গান-বাজনা আর হৈ-চৈ করেছে, মাঠে খেলতে নেমে বিপক্ষের খেলোয়াড়দের সাউথ সি থেকে আনা পুঁতির মালা বিলিয়েছে, সেটা ব্রাজিলের মানুষদের ভালো লেগেছে৷ বৃহস্পতিবারেও: খেলার মাঝখানে বিপক্ষ প্লেয়ারের বুটের ফিতে বেঁধে দেওয়ার মতো সৌজন্য বোধহয় শুধু এই সাগরপারের সহজ-সরল-সানন্দ মানুষগুলেোই করতে পারে৷

(130617) -- BELO HORIZONTE, June 17, 2013 () -- Tahiti's players celebrate after scoring during the FIFA's Confederations Cup Brazil 2013 match against Nigeria, held at Mineirao Stadium, in Belo Horizonte, Minas Gerais state, Brazil, on June 17, 2013. (/David de la Paz) (itm)
স্পেনের ‘এ’ টিম নামলে ১৫ অথবা ২০ গোলও হতে পারতো!ছবি: picture alliance / Photoshot

যে রাঁধে, সে কি চুল বাঁধে না?

ওদিকে তারা যে ফুটবল খেলতে পারে না, এমন নয়৷ ওসিয়ানিয়ার চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বাধিকারবশেই কনফেড কাপে এসেছে৷ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে গোল করেছে৷ ফুটবলের পরাশক্তি স্পেনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার গোল করতে না পারলেও, চেষ্টার কোনো কমতি করেনি৷ বলতে কি, স্পেন প্রথম গোলটা করার পর যেন তাহিতিয়ানদের প্রতিরোধের ক্ষমতা দেখে থতমত খেয়ে যায়: যে কারণে খেলার ৩১ নিমিট অবধি স্কোর ছিল, ১-০!

তাহিতিয়ানদের খেলার কতগুলো দিক চোখে পড়ার মতো৷ যেমন তাদের বলশালী শরীর এবং ফিটনেস – যদিও তাদের স্বভাবে কিংবা খেলায় গুণ্ডামির লেশমাত্র নেই৷ দলে মাত্র একজন পেশাদারি খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও ফুটবলের বুনিয়াদি দক্ষতাগুলো তাদের সকলেরই আয়ত্ত করা আছে৷ বল রিসিভিং কিবা পাসিং কোনোভাবেই নাক কুঁচকোনোর মতো নয়৷ বিশেষ করে তাদের অফেনসিভ মনোবৃত্তি সকলকেই চমকে দিয়েছে, যেমন দিয়েছে তাদের দ্রুত ফিরে এসে পুনর্গঠিত হবার মতো কন্ডিশন এবং ডিসিপ্লিন৷

শোনা যাক স্পেনের কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কে স্বয়ং কি বলেছেন৷ দেল বস্কে বলেছেন: ‘‘তাহিতি খেলায় ‘ফেয়ার প্লে'-র একটা দৃষ্টান্ত রেখেছে৷ এছাড়া তারা যখনই সুযোগ পেয়েছে, সামনের দিকে এগিয়ে গেছে৷ আমরা আরো গোল করতে পারিনি কেননা ওরা আমাদের গোল করতে দেয়নি৷ এই গেমের ফলে ফুটবলের কোনোরকম ক্ষতি হয়নি৷ বলতে কি, ফুটবল এর ফলে আরো শক্তিশালী হয়েছে৷'' এর সাথে যোগ করা যেতে পারে, তাহিতির কোচ এতায়েতু কি বলেছেন৷ তিনি বলেছেন: ‘‘আমরা মাঠে হেরেছি বটে, কিন্তু দর্শকদের কাছে জিতেছি৷''

ফুটবলে বা জীবনে, ঐ জেতাটাই কি সবচেয়ে বড় জেতা নয়?

এসি/ডিজি (ডিপিএ, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য