তিন বছরে আফিকার জঙ্গলে খুন হয়েছে আটশত গন্ডার
২৯ মার্চ ২০১১আজ একই পরিণতি বরণ করতে যাচ্ছে আফ্রিকার গন্ডার সম্প্রদায়৷
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গন্ডারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রচণ্ডভাবে চিন্তিত৷ আর দুশ্চিন্তা না করার কোন কারণও নেই৷ প্রাণিকুলের জন্য বিশাল আবাসস্থল আফ্রিকার বনজঙ্গলে গত তিন বছরে খুন করা হয়েছে আটশত গন্ডার৷ কেবল গত বছরেই অবৈধ শিকারীদের হাতে মারা গেছে ৩৩৩টি৷ আর এই ২০১১ সালের প্রথম তিন মাসে এ পর্যন্ত মেরে ফেলা হয়েছে ৭০টি গন্ডার৷ ভাবতেই অবাক হতে হয়, মানুষ কি করে পারে এই বিশাল অথচ শান্ত জন্তুটাকে মেরে ফেলতে! কেন তাদের মারা হচ্ছে?- এ কথায় উত্তর শিং-এর জন্য৷ গন্ডারের কাল হয়েছে এই শিং৷ প্রতি কিলোগ্রাম শিং আন্তর্জাতিক কালো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে৷ আর এই শিং যাচ্ছে সনাতনী ওষুধ তৈরির জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে৷
আফ্রিকায় সাদা এবং কালো, এই দুই ধরণের গন্ডারের দেখা মেলে৷ আন্তর্জাতিক প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার' বা আইইউসিএনের মতে, এভাবে চলতে থাকলে সেই দিন বেশি দূরে নয়, যে দিন আফ্রিকা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে গন্ডার৷ এ অবস্থায় তারা অবৈধ শিকারীদের ঠেকাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রাণী সংরক্ষণবাদীদের এক হয়ে কাজ করার উপরই গুরুত্ব দিয়েছেন তারা৷ আইইউসিএনের কর্মকর্তা রিচার্ড এমসিলে বলেন, সেই সঙ্গে প্রয়োজন ওদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সম্মত বাসভূমি এবং প্রয়োজন অবৈধ পাচার ও শিকার রোধে কঠোর পদক্ষেপ৷ তাহলেই বাঁচতে পারে আফ্রিকার দুই ধরণের গন্ডার সম্প্রদায়৷ আফ্রিকার গন্ডার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গ্রুপের মতে, সংঘবদ্ধ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে৷
হিসাবে দেখা যাচ্ছে, আফ্রিকায় কালো গন্ডারের সংখ্যা এখন চার হাজার ৪৮০টি৷ অপর দিকে সাদা গন্ডারের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার৷ তবে কালোর চেয়ে সাদা গণ্ডারের সংখ্যা বেশি মনে হলেও এই সংখ্যাকে অনেক বেশি বলে মনে করে না আইইউসিএন৷ তারা বলছে, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া এবং জিম্বাবোয়ের জঙ্গলে এদের সংখ্যা আরও বাড়তো, কিন্তু বাড়েনি কেবল অবৈধ শিকারীদের কারণে৷
অবশ্য এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার অবৈধ শিকার বিরোধী ইউনিট বেশ কিছু অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে, কিন্তু তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়৷ প্রয়োজন আরও জোরালো অভিযান, মত পরিবেশবাদীদের৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন