৩,৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা পিকে-র অপেক্ষায়
২২ অক্টোবর ২০২০কিন্তু তার বিরুদ্ধে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে৷ বাকি টাকা কীভাবে ফেরত আনা হবে? আর ফেরত আনা না গেলে তিনি প্রতারিতদের টাকা দেবেন কোথা থেকে?
২৫ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে তিনি এমিরেটসের একটি বিমানে দেশে ফিরবেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী৷ আর আদালত বলেছে, দেশে ফেরার পরই আইন অনুযায়ী তাকে আটক করে কারাগারে নিতে হবে৷ তবে তিনি কারাগারে বসে অর্থ ফেরত দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন৷
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেছেন, ‘‘আমার জানা মতে আদালতের মাধ্যমে দেশে ফেরার সুযোগের ঘটনা বাংলাদেশ কেন ব্রিটিশ ল যেসব দেশে চলে, সেখানে নেই, এটাই প্রথম৷ আর এতে দুর্নীতি দমনে ভালো হবে, না খারাপ হবে সে বিষয়ে আমি এখন কোনো মন্তব্য করতে চাই না৷’’
‘‘আদালত তাকে বিমানবন্দর থেকেই আটক করে কারাগারে নিতে বলেছেন৷’’
তিনি জানান, দুদকের মামলায় তার ২৭৫ কোটি টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ আছে৷ আর তার বেশ কিছু সম্পদও আদালতের নির্দেশে জব্দ করা হয়েছে৷
‘‘তার বিরুদ্ধে কোম্পানি কোর্টে মামলা আছে৷ সেখানে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাতের যে অভিযোগ আছে, তা তিনি কীভাবে শোধ করবেন সেটা আমরা বলতে পারবো না৷ সেটা পরিশোধ করতে আদালত তাকে সহায়তা করবে,’’ বলেন দুদকের আইনজীবী৷
গত ৭ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের পরিচালক পিকে হালদারের পক্ষে আদালতকে জানান, তিনি এখন দেশের বাইরে থাকলেও দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করে ওই টাকা বিনিয়োগকারীদের ফেরত দিতে চান৷ আদালত তাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন৷ তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে ওই আবেদন করলেও এখন আর গ্রেপ্তার এড়াতে পারছেন না৷ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকার তার আদেশে বলেছেন, ‘‘পিকে হালদার যদি দেশে আসেন, তাহলে কোম্পানি ম্যাটারের নিষ্পত্তি করা যাবে৷ সেটা করতে তিনি দেশে পা ফেলামাত্র তাকে যেন গ্রেপ্তার করা হয় এবং জেলে নেওয়া হয়৷ তাকে যেন বাইরে যেতে না দেওয়া হয়৷ এটা করা হলে তার আবেদন অনুযায়ী তাকে আর কিডন্যাপ করা হবে না৷’’
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘‘তার বিরুদ্ধে দুদক মানি লন্ডারিং এবং কোম্পানি আইনে একাধিক মামলা করেছে৷ শুধু টাকা ফেরত দিলেই হবে না৷ তাকে জেল-জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে৷ আর যত টাকা আত্মসাৎ করেছেন তার দ্বিগুণ জরিমানা হবে৷’’
পিকে হালদার টাকা পাচার করেছেন ক্যানাডায়৷ কিন্তু ক্যানাডায় ওই টাকা তার পক্ষে হজম করা সম্ভব ছিল না৷ কারণ, ক্যানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি আছে৷ তার বিরুদ্ধে রেড ওয়ারেন্টও জারি হতো৷ ক্যানাডা থেকে তাকে আইনি প্রক্রিয়ায় ফেরত আনা যেতো৷ পাচার করা অর্থও ফেরত আনা সম্ভব ছিল বলে আইনজীবীরা জানান৷
মনজিল মোরশেদ মনে করেন, দেশে ফেরত আসায় একটাই সুবিধা, তা হলো এখন তার পাচার করা টাকা ফেরত আনা অনেক সহজ হবে৷ তার মাধ্যমেই আবেদন জানানো যাবে৷ তবে টাকা ফেরত না আনা গেলে যাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন. তা ফেরত দেয়ার কোনো সুযোগ নেই৷
মনজিল মোরশেদ বলেন, ‘‘এখন দেখার বিষয়, আইন কোন গতিতে চলে৷ আইন যদি নিজস্ব গতিতে চলে, তাহলে প্রতারিতরা টাকা পাবেন৷ পিকে হালদারের শাস্তি এবং অর্থদণ্ডও হবে৷’’
এসব বিষয় নিয়ে পিকে হালদারের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান লিমন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি৷
২০১৭ সালের মে মাসের ছবিঘরটি দেখুন...