তিনটি মূল এ্যাজেন্ডা নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর
২৮ জুলাই ২০১০প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ডেভিড ক্যামেরনের প্রথম ভারত সফরের প্রধান এ্যাজেন্ডা তিনটি৷ অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তন৷ প্রথম এ্যাজেন্ডা অর্থনীতি৷ রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের অত্যধিক নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনে ক্যামেরনের জোট সরকার জোর দিতে চাইছেন বেসরকারি ক্ষেত্রের ওপর৷ বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার চাপ কাটাতে ভারতের বাজার ব্রিটেনের পক্ষে যে জরুরি, সেকথা গোপন করেননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন৷ ব্যাঙ্গালোরে তিনি বলেন, ভারতের ঊর্ধ্বমুখি বাজার হাতছাড়া করতে চায়না ব্রিটেন৷
এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশানাল রিলেশনসের অধ্যাপক ইমনকল্যাণ লাহিড়ি ডয়েচে ভেলেকে সেকথাই বললেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে ভারতের মত বিরাট বাজারকে উপেক্ষা করতে পারেনা ব্রিটেন৷ এবং আজকের যুগে বাজারটা একটা মূল্যবান ইউনিট৷ সুতরাং সেই অর্থে ব্রিটেনের দরকার ভারতকে৷ এই পথকে মসৃণ করতে ক্যামেরন সরকারের অভিবাসন নীতিকে করতে হবে আরো উদার৷
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ সন্ত্রাস মোকাবিলা৷ ভারতের মত ব্রিটেনও সন্ত্রাসের শিকার৷ তিনি বলেন, মুম্বই হামলার অপরাধীদের শাস্তি পেতেই হবে৷ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত ও ব্রিটেন তাই একযোগে ব্যবস্থা নিয়েছে ও নেবে৷ এবছর ভারতে কমনওয়েলথ গেমস এবং ২০১২ সালে লন্ডনে অলিম্পিক গেমস৷ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে দুদেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বলার অপেক্ষা রাখেনা৷
তৃতীয় চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন৷ কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনতে শিল্পোন্নত দেশগুলির ভূমিকা অস্বীকার না করেও বলা যায় ভারতের মত দেশগুলিকেও এবিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে৷ বলা বাহুল্য, ভারতের মত বিকাশমুখি দেশের জ্বালানির চাহিদা মাথায় রেখে, বলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সফরে ৫৭টি হক জঙ্গি বিমান কেনার চুক্তি সই হবার কথা৷ জানা গেছে, ভারতে অসামরিক পরমাণু কেন্দ্রের সাজসরঞ্জাম রপ্তানির জন্য সেদেশের সংস্থাগুলিকে লাইসেন্স দিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার৷ শুধু তাই নয়, জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পেতে ভারতকে সমর্থনের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন৷
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এসেছেন প্রায় ১০০ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদল৷ প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-এর সঙ্গে আজ তাঁর দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে বৈঠক৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক