তৃণমূল ও বিজেপি-র প্রার্থী দুই জা, তারপরেও পরিবারে সদ্ভাব
পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি গ্রামে এই লড়াই হচ্ছে। বড় জা বিজেপি-র ও ছোট জা তৃণমূলের প্রার্থী।
দুই জায়ের লড়াই
তারা একই পরিবারের দুই বধূ। বাড়িতে সদ্ভাব। কিন্তু ভোটের ময়দানে তারা চরম শত্রু। কারণ, মামনি মুলা তৃণমূলের প্রার্থী এবং মিতালি মুলা বিজেপি-র। এবার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়ছে।
সাজাব যতনে
এমনকী প্রচারে যাওয়ার আগে ছোট জা-কে সাজিয়ে দেন বড় জা। বড়কে সাহায্য করেন ছোট। এরপরই তারা প্রচারে নামেন।
বাড়িতে বন্ধু, কিন্তু বাইরে?
তবে রাজনীতির ময়দানের শত্রুতা বাড়িতে ঢুকতে দেন না মামনি ও মিতালি। বাড়িতে তারা একেবারে বন্ধু। একসঙ্গে রান্না করেন। গল্প করেন। প্রচারে কে কী করলেন, সে সবও গল্প হয়।
কী বলছেন মামনি
ডিডাব্লিউকে মামণি বলেছেন, বাড়ির সবাই তৃণমূল করতেন। এবার তিনি আর প্রার্থী হতে চাননি। কিন্তু দল প্রার্থী পায়নি। তাকে দাঁড়াতে বলে। তারপর তিনি রাজি হন। যদি জিতে আসেন, তাহলে পাকা রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করবেন। হেরে গেলেও তার কোনো ক্ষোভ থাকবে না।
মিতালি যা বললেন
মিতালির দাবি, ''আ্মাদের পরিবারে কোনো গোলমাল নেই। বিজেপি ভালো প্রার্থী পাচ্ছিল না বলে আমাকে দাঁড়াতে বলে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে দাঁড়াতে হয়েছে। এখানে প্রায় প্রতিবছর বন্যা হয়। ফলে রাস্তা ও পানীয় জলের খুব সমস্যা। জিতলে সেই সমস্যা দূর করতে চাইব।''
কাশকুলি গ্রামের ঘটনা
দুই জায়ের এই লড়াই হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কাশকুলি গ্রামে। গ্রামের মানুষও দুই জায়ের লড়াই নিয়ে খুবই উৎসাহী।
সুভাষ মুলার বক্তব্য
সুভাষ মুলা পরিবারের বড় ভাই। মিতালি মুলার স্বামী। ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছেন, ''আগে তৃণমূলে ছিলাম। বছর বারো হলো বিজেপি করছি। এবার আমাদের আসনটি মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে গেছে। তাই মিতালি লড়ছেন। আমরা দুই ভাই আলাদা দল করি। দুই বউও আলাদা দলের প্রার্থী। কিন্তু পরিবারের ভিতরে তার ছায়া পড়ে না।''
আশিস মুলার কথায়
আশিস মুলা হচ্ছেন মামনি মুলার স্বামী। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''আগে আমার দাদাও তৃণমূল করতো। মতবিরোধের জেরে এখন বিজেপি করে। কিন্তু রাজনীতি তার জায়গায়, পরিবার তার নিজের জায়গায়। পরিবারের মধ্যে আমরা রাজনীতি ঢুকতে দিই না।'' আশিস জানিয়েছেন, 'বিজেপি-র নীতি মানতে পারেন না বলে তিনি তৃণমূল করেন।
মিতালির দেওয়াল লেখা
কাশকুলি গ্রামে ঘুরলেই দেখা যাবে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে দেওয়াল লেখা রয়েছে। রাজ্যের অন্য জায়গায় পঞ্চায়েত নিয়ে সহিংসতা, মারধর, বোমাবাজি, ভয় দেখানোর ছবি এখানে নেই।
দেওয়াল লেখায় মামনি
মামনির হয়েও প্রচুর দেওয়াল লেখা হয়েছে। দুই জায়ের জমজমাট লড়াইয়ের দিকে নজর রয়েছে গোটা রাজ্যের। কে জেতেন, কী কাজ করেন, পরিবারের সম্প্রীতি অটুট থাকবে তো এরকম প্রশ্নও গ্রামের মানুষের মধ্যে উঠছে।