1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘তোমরা করছো বস্ত্রহরণ, কে করবে অস্ত্রহরণ?'

Sanjiv Burman২৪ জানুয়ারি ২০১৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের কঠোর সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে৷ সামাজিক মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে হামলার অনেক ছবিও৷

https://p.dw.com/p/2rSbx
Bangladesch Gewalt unter Studentengruppen
ছবি: bdnews24.com

গত ১১ জানুয়ারি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত ঢাকার সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা৷

পরে এই আন্দোলনে ছাত্রীদেরকে উত্ত্যক্ত ও নিপীড়ন করার অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে৷

ছাত্রলীগের এমন নিপীড়নের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার উপাচার্যকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করেন৷ তখন আবারও ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় ও তাঁদের লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ ছাত্রলীগের কর্মীরা উপাচার্যকে ‘উদ্ধার' করেন৷

বিষয়টি নিয়ে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ ছাত্রলীগ দাবি করেছে, সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে বাম সংগঠনের কর্মীরা ছাত্রলীগের ওপর হামলা করেছে এবং অনেককে আহত করেছে৷ এ নিয়ে বিতণ্ডা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও৷ অভিযোগের তির ছাত্রলীগের দিকেই বেশি৷

ছাত্রলীগের এক নারী কর্মী আন্দোলনরত নারী কর্মীদের টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে নিচ্ছেন এমন কয়েকটি ছবি পোস্ট করে এমন কয়েকটি ছবি পোস্ট করে বদরুদ্দোজা বাবু লিখেছেন, ‘‘এটা ভালো৷ রেসকিউ অপারেশনে যাবার সময় নারী সদস্য রাখা! মেয়েদের ওপর মেয়েরা হাত-পা তুললো, ছেলেরা নয়! এই 'সোনামুখ'গুলো দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে! আমি নিশ্চিত!''

জামিউল আহসান শিপু লিখেছেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখুন নারীদের শত্রু নারী৷ একজন নারী হয়ে কিভাবে আরেক নারীর প্রকাশ্য শ্লীলতাহানি করছে৷ ছবিগুলো এর আগেই ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেছে৷ এই ছবিগুলো সংগৃহীত৷ তা প্রকাশের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি৷''

Bangladesch Gewalt unter Studentengruppen
ছবি: bdnews24.com

বাকী বিল্লাহ লিখেছেন, ‘‘উপাচার্যের কার্যালয়ের গেট আগেও অনেকবার ভাঙা হইছে৷ বিএনপি-জামাতের আমলে শামসুন্নাহার হল নিপীড়নবিরোধী আন্দোলন, হুমায়ুন আজাদের হত্যাপ্রচেষ্টাবিরোধী আন্দোলন ও হ্যাপী নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদের মুখে তৎকালীন উপাচার্যরা শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি না হতে চাইলে প্রতিবারই উপাচার্যের কার্যালয়ের গেট ভাঙা হয়েছে, কাচ ভাঙা হয়েছে৷ ২০০২ সালে আমি নিজে উপাচার্যের কার্যালয়ের কাচ ভেঙেছি ইট দিয়ে৷ তখন এই ঘটনায় বাম সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করতো জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, এখন করছে ছাত্রলীগ৷''

আরেক পোস্টে দেয়া এক মন্তব্যে নোমান রহমান লিখেছেন, ‘‘কী নির্লজ ব্যহায়া আচরণ ছাত্রলীগ কর্মীদের থেকে আমরা দেখছি, তা কখনোই জাতি আশা করে না, তবুও ছাত্রলীগ তাদের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে আর রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিরা লোলুপ দৃষ্টিতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন, তদন্ত কমিটির নামে সময়ক্ষেপণ করে ঘটনাটি মানুষের দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে বিচারের পরিবর্তে পুরস্কৃত করবেন আর কতকাল৷''

সাংবাদিক নূর সিদ্দিকী লিখেন, ‘‘তোমরা করছো তাঁদের বস্ত্রহরণ, কে করবে তোমাদের অস্ত্রহরণ?''

প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিয়ে ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে উদ্ধার করার সমালোচনা করেছেন সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বেখবর: ছাত্রলীগকে এভাবে ফাঁসালো কেন ভিসি? ঢাবি'র ভিসি উদ্ধার পাওয়ার জন্য পুলিশকে ডাকতে পারতেন৷ কিন্তু তিনি ছাত্রলীগকে ডাকতে গেলেন কেন? এটা তো পুলিশের কাজ, ছাত্রলীগের না৷ তিনি নিজে উদ্ধার হলেন৷ কিন্তু ছাত্রলীগকে দিয়ে এই কাজ করাতে গিয়ে সংগঠনটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেল৷ এটা কি ভালো কোনো দৃষ্টান্ত হলো? উদ্ধার হবার পর যেভাবে ভিসির ঘাড়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা হাত রেখেছে, দু'দিন পর যদি তারা অন্যায্য কোনো কাজ করে, তখন কি তাদেরকে ঘাড় থেকে নামাতে পারবেন? অতএব, সাধু সাবধান!''

Bangladesch Gewalt unter Studentengruppen
ছবি: bdnews24.com

হামলার দিনটিকে ‘ইতিহাসের কালো দিন' বলে উল্লেখ করেছেন শরিফুল হাসান ও কাজল আবদুল্লাহ৷ শরিফুল লিখেছেন, ‘‘ছাত্রলীগ কিংবা বাম নয়, আমার খুব করুণা হ‌চ্ছে এই ভি‌সি, প্রক্ট‌রের জন্য৷

সাধারণ ছাত্রদের বিরু‌দ্ধে যারা একের পর এক সিদ্ধান্ত নেয় এবং তা‌দে‌র‌কে রক্ষা কর‌তে ছাত্রলীগ‌কে ত্রাতা হ‌তে হয়৷ আর ছাত্রলীগও সগর্ব‌ে ব‌লে বেড়ায়, আমরা ভি‌সি‌কে উদ্ধার ক‌রে‌ছি৷ আজ‌ যা ঘ‌টে‌ছে তার জন্য শুধু এটাই বলা যায়, আপনারা প্রক্টর ও উপাচার্য হওয়ার যোগ্যতা রা‌খেন না৷ কাজেই পদত্যাগ করুন৷''

কাজল আবদুল্লাহ লিখেছেন, ‘‘আজকের দিনটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নিকষ দিন৷ আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদে ও নির্দেশনায় শিক্ষার্থীরা মার খেলো৷ তারা যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিচার চাইতে গিয়েছিল৷''

এদিকে, কেউ কেউ ছাত্রলীগের পক্ষেও পোস্ট দিয়েছেন৷ মামুনুর রশীদ লিখেছেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন করলো বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা! তাদের সাথে দোসর হলো শিবির ছাত্রদল৷ এর আগে ভিসি স্যারকেও লাঞ্চিত করেছে অশান্তি সৃষ্টিকারীর দল৷ ষড়যন্ত্র কঠোরভাবে দমন করা উচিত৷ বামগুলো একটা ফাও বিড়ি খাইতে পারলেই মিছিলে নেমে যায়৷''

সংকলন: যুবাযের আহমেদ

সম্পাদনা : আশীষ চক্রবর্ত্তী

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান