আদালতের রায়
২৮ মার্চ ২০১২স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন৷ এমন সময় পুলিশ এসে পরিচয়পত্র দেখতে চাইলো৷ এমন ঘটনা জার্মানিতে খুবই স্বাভাবিক৷ প্রতিটি মানুষকেই সঙ্গে পরিচয়পত্র রাখতে হয়, এটাই দেশের নিয়ম৷ জার্মান বা বিদেশি নাগরিক – কারো কোনো ছাড় নেই৷ তার উপর সমস্যা হলো, কে জার্মান আর কে বিদেশি – সেটা বোঝার উপায় কী? কারণ অনেক বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষই জার্মান নাগরিক৷ তবে বিদেশি নাগরিক বা বিদেশি বংশোদ্ভূতদের অনেকেই এই নিয়মে তেমন অভ্যস্ত নন৷ মনে করেন, এতো লোক থাকতে আমার কাছেই কেন এলো পুলিশ? আমাকে অন্যরকম দেখতে, এই কারণে? বিদেশি মানেই সন্দেহের পাত্র হতে হবে?
এমনই এক ঘটনা ঘটেছিল এক ট্রেনযাত্রীর সঙ্গে৷ পুলিশ তাঁর পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তিনি বেঁকে বসেন৷ জানতে চান, কেন তাঁকেই বেছে নেওয়া হলো? কথা-কাটাকাটির সময় নাকি এক পুলিশ কর্মী স্পষ্ট বলে বসেন, ত্বকের রঙের কারণেই তাঁর পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হয়েছে৷ এই উত্তর শুনে সেই যাত্রী চরম অপমানিত বোধ করেন এবং আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেন৷
আদালত রায় দিয়েছে৷ সেই রায় শুনে বিস্মিত অভিযোগকারী ট্রেনযাত্রী৷ বিশেষ কোনো যাত্রাপথে পুলিশ বিনা সন্দেহে শুধুমাত্র ত্বকের রঙ বা চেহারার ভিত্তিতে পরিচয়পত্র দেখতে পারে – বিচারপতি এমনটাই রায় দিয়েছেন৷ এই সব রেলপথে অনেক বিদেশি অবৈধভাবে জার্মানিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করে অথবা ভিসা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করে৷ তাই পুলিশকে এই ধরণের অপরাধ বন্ধ করার চেষ্টা করতেই হবে৷ অতএব ত্বকের রঙ বা চেহারার ভিত্তিতে সম্ভাব্য অপরাধী খোঁজার প্রচেষ্টায় কোনো সমস্যা নেই৷ পুলিশ বাহিনীতে যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী না থাকায় সব মানুষের পরিচয়পত্র দেখা সম্ভব নয়৷ তাই এমন ‘ব়্যান্ডম চেক' করা হয়৷ তবে আদালত সেইসঙ্গে এও বলেছে যে, সব ক্ষেত্রে এমন প্রক্রিয়া বৈধ হতে হবে, তার কোনো মানে নেই৷ সীমান্ত পুলিশের অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন, যাতে খামখেয়ালীপনার অভিযোগ না ওঠে৷
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে৷ তবে জার্মানিতে সাধারণত যেমনটা ঘটে থাকে, সব পক্ষ আপাতত সতর্কভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে৷ ফলে এখনো কোনো বড় আকারের প্রতিক্রিয়া শোনা যাচ্ছে না৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ