ত্রাণ দেবে প্রশাসন, নেতারা নন: মমতা
২৮ মে ২০২১তাহলে কি ত্রাণ-দুর্নীতি স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং সুন্দরবনের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ত্রাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু ত্রাণের কাজ করবে প্রশাসন। দল তাতে জড়িত থাকবে না। আমফানের পর শাসক দলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সে কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে।
আমফানের পর ত্রাণ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছিল। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের নামও সামনে এসেছিল। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ক্ষতিপূরণ দেবে শুধুমাত্র প্রশাসন। নেতারা এর সঙ্গে আর যুক্ত হবেন না। ইয়াসের পরেও সে কথা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধুমাত্র প্রশাসনই ত্রাণ দেবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আমফানের পরে অভিযোগ উঠেছিল, যাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা, তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। রাজনৈতিক রং দেখে তা দেওয়া হচ্ছে। নেতারা ত্রাণের জিনিস আত্মসাৎ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। প্রাথমিক ভাবে শাসক দল তা মেনে না নিলেও, পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা বিষয়টিতে আলাদা মাত্রা যোগ করে।
রাজ্য বিজেপির নেতা সৌরভ শিকদারের বক্তব্য, ''নেতাদের ত্রাণ থেকে সরিয়ে রেখে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, আমফানের সময় দুর্নীতি হয়েছিল। আমরা তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলাম।'' নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক মন্ত্রী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমফানের সময় যে দুর্নীতি হয়েছিল, তা আগেই দল স্বীকার করেছিল এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছিল। নতুন করে সে প্রসঙ্গ সামনে আনার আর মানে হয় না।''
তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ইয়াস নিয়ে বিরোধীরা যাতে এবার রাজনীতি করতে না পারে, তার জন্য শুরুতেই 'বেড়াল মেরে রাখলেন' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবারই রাজ্যে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন তার রাজ্যের দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখার কথা ছিল। ত্রাণ নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকে তিনি থাকতে পারবেন না। তাকে সমস্ত কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হবে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এবং এক সময় মতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগী শুভেন্দু অধিকারী ওই বৈঠকে থাকবেন শুনেই মমতার এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, আনন্দবাজার)