দক্ষিণ এশিয়ায় যেভাবে পুলিশের নীতিপুলিশি
কোন কোন বিষয়ে পুলিশ, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার পুলিশ, তার নীতিপুলিশি দেখিয়ে আসছে, তার কিছু দৃষ্টান্ত দেখুন ছবিঘরে...
দক্ষিণ এশিয়ায় যা হয়
ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পুলিশকর্তাদের নানা ধরনের আইনবহির্ভূত নীতি আরোপ করায় জড়িত থাকার কথা শোনা যায়৷ বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে মিলে বা কখনো বিরোধিতা করেও নীতিপুলিশিতে দেখা যায় পুলিশি সম্পৃক্ততা৷ ব্যক্তিগত ও গণপরিসরের মধ্যে ফারাক না করতে পারাও লক্ষণীয় হয়ে ওঠে এক্ষেত্রে৷
নীতিপুলিশি কোনটি?
বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে প্রায়ই দেখা যায় পুলিশ তাদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়৷ যুক্তি হিসাবে দেখানো হয় নৈতিকতা, মূল্যবোধের প্রশ্ন, যা অনেক ক্ষেত্রেই সেই অঞ্চলের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হয়ে পড়ে৷ ক্রমশই, এই ‘নীতিপুলিশি’ দক্ষিণ এশিয়ায় বাস্তবতার অংশ হয়ে উঠেছে৷
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক উদাহরণ
সম্প্রতি, চলচ্চিত্র পুলিশকে হেয় করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন শিল্পীরা৷ মামলার এজাহারে বলা হয়েছে চলচ্চিত্রটি আসলে ‘সুস্থ বিনোদনের পরিপন্থী’৷ কোন বিনোদন সুস্থ, আর কোন বিনোদন তা নয়, এই বিচার কি আদৌ পুলিশে এক্তিয়ারে রয়েছে, প্রশ্ন তুলছেন অনেকে৷
ব্যক্তিগত পরিসরেও পুলিশি
ভারতের আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত পরিসরে পর্নো ছবি দেখা কোনো অপরাধ নয়৷ কিন্তু তা উপেক্ষা করে, ২০০৮ সালে পুলিশ দশ নারী ও এক যুগলকে গ্রেপ্তার করে মহারাষ্ট্রের লোনাভলা অঞ্চলে৷ যুক্তি, সমাজে অশ্লীলতা ছড়াচ্ছেন তারা৷ দু’বছর সেই মামলা চলার পর আদালত রায় দেয় যে ব্যক্তিগত স্তরে পর্ন দেখা মোটেও তা করেনা৷
‘অপারেশন মজনু’
লায়লা-মজনুর গল্প অন্যদের কাছে ভালোবাসার নজির হলেও ভারতে ‘অপারেশন মজনু’ ছিল পুলিশের নীতিপুলিশির উদাহরণ৷ ২০১১ সালে অলকা পাণ্ডে নামের এক নারী পুলিশকর্মীর নেতৃত্বে গাজিয়াবাদ পুলিশ বিভিন্ন পার্কে টহল দেওয়া শুরু করে৷ অপারেশনের অংশ হিসাবে প্রেমিকযুগলদের উঠবস করিয়ে তার ভিডিও করে তারা৷ এই অপারেশনের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে পাণ্ডে বলেন যে ‘নিষ্পাপ মেয়েদের খারাপ ছেলেদের হাত থেকে বাঁচাতেই’ এমনটা করেছিলেন তারা৷
ভারতে আরো যা
অপারেশন মজনু ছাড়াও ভারতে একাধিকবার জনসমক্ষে এসেছে পুলিশের এক্তিয়ার বহির্ভূত কীর্তিকলাপ৷ যেমন ভ্যালেন্টাইন ডে পালন, সমকামিতা ইত্যাদি প্রসঙ্গে বিভিন্ন পুলিশকর্মীদের মন্তব্য শিরোনামে উঠে এসেছে৷ আলোচিত হয়েছে নির্যাতিত, ধর্ষিত নারীকে নিয়ে করা পুলিশের নানা কটু মন্তব্যও৷
পাকিস্তানের নীতিপুলিশির উদাহরণ
পার্কে কোনো যুগল দেখলেই তাদের অভিভাবকদের কাছে নালিশ জানানোর অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে পাকিস্তানের পুলিশের৷ শুধু তাই নয়, নালিশ না করার ক্ষেত্রে ঘুস নেবার কথাও শোনা গেছে সেখানে৷
পুলিশের সহায়তায় যারা
দক্ষিণ এশিয়ায় নীতিপুলিশির কাজে পুলিশকে সহায়তা করতে দেখা যায় রাজনৈতিক গোষ্ঠী, ধর্মীয় সংগঠন ও কখনো কখনো কর্তৃপক্ষকেও৷ জনতোষ নীতি বনাম আইন বনাম সামাজিক মূল্যবোধের অমীমাংসিত দ্বন্দ্ব দক্ষিণ এশিয়ায় নীতিপুলিশির বান্ধব পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে মনে করেন অনেকে৷