দরিদ্র নারীরা গর্ভনিরোধে অনিচ্ছুক?
৫ নভেম্বর ২০১৬দরিদ্র বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর লক্ষ লক্ষ নারী এখনো আধুনিক গর্ভনিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণে অনিচ্ছুক৷ তাই তারা অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ এবং অনিরাপদ গর্ভপাতের ঝুঁকি নিচ্ছে৷ পরিণামে ‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং ২০২০'-এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যর্থ হতে চলেছে৷
‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং ২০২০', অর্থাৎ এফপি২০২০-এর পরিকল্পনা করা হয়েছিল ২০১২ সালের লন্ডন শীর্ষ সম্মেলনে৷ এ উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বের আরো অন্তত ১২ কোটি নারীকে সেবার আওতায় নিয়ে আসা৷ কিন্তু চার বছরের মাথায় এফপি২০২০ তাদের প্রতিবেদনে বলছে, অগ্রগতির হার মোটেই সন্তোষজনক নয়, এ হারে কাজ হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালের পর থেকে ৩০ মিলিয়ন অর্থাৎ তিন কোটি নারী এবং মেয়েকে গর্ভনিরোধ প্রক্রিয়ার আওতায় নেয়া সম্ভব হয়েছে৷ তবে এই অর্জন একেবারেই আশাব্যঞ্জক নয়, কেননা, এ সময়ে যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল তার চেয়ে সংখ্যাটা অন্তত ২০ মিলিয়ন বা দুই কোটি কম৷ মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে তাই স্পষ্ট করেই বলা হয়, ‘‘আমরা যদি আরো দ্রুত উন্নতি করতে না পারি, তাহলে ২০২০ সালের মধ্যে নারী এবং মেয়েদের প্রতি আমাদের যে অঙ্গীকার রয়েছে, তা পূরণ করতে পারবো না৷''
এফপি২০২০-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উন্নয়নশীল দেশগুলোর ২২৫ মিলিয়ন নারী ও মেয়ে গর্ভধারণ করতে চায় না, অথচ তারা নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়ার সেবা পাচ্ছে না৷
গর্ভধারণকালীন নানা জটিলতায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ নারী ও মেয়ে মৃত্যু বরণ করছে৷
তবে এফপি২০২০-এর প্রতিবেদনে আশাব্যঞ্জক দিকও রয়েছে৷ বলা হয়েছে, বিশ্বের ৬৯টি অতি দরিদ্র দেশের ৩০০ মিলিয়ন, অর্থাৎ ৩০ কোটি নারী ও মেয়ে জন্মনিরোধের আধুনিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে৷ ২০১৩ সালের তুলনায় শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ বেড়েছে৷ পূর্ব এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি৷ সে অঞ্চলের ইথিওপিয়া, কেনিয়া, লেসোথো, মালাওয়ি এবং মোজাম্বিকে অবস্থার উন্নতিকে আশানুরূপই মনে করা হচ্ছে৷
এশিয়া এবং ল্যাটিন অ্যামেরিকার নারী ও মেয়েদের মধ্যে জন্মনিরোধক ব্যবহারের প্রবণতা আগে থেকেই তুলনামূলকভাবে বেশি৷ তবে এই দুই অঞ্চলে উন্নতিটা হচ্ছে ধীর লয়ে৷
এসিবি/ডিজি (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)