দল নয়, নেতা দেখে ভোট দিচ্ছেন জার্মানরা
১০ অক্টোবর ২০২২মহামারি, যুদ্ধ, জ্বালানি সংকট, চরম মূল্যস্ফীতির ধাক্কা সামলাতে ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো জার্মানিও হিমসিম খাচ্ছে৷ এমন অবস্থায় সরকারের প্রধান শরিক দল সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি-র জনপ্রিয়তা দ্রুত কমে চলেছে৷ ভোটারদের মনে অসন্তোষ, সংশয় ও অনিশ্চয়তার ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিরোধী শিবিরের দলগুলি৷ অথচ রোববার লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেলো এসপিডি৷ সংকটের সময় চ্যান্সেলর শলৎসের নেতৃত্ব নয়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্টেফান ভাইলের জনপ্রিয়তাকেই যে সেই জয়ের পেছনে মূল কারণ, সে বিষয়ে কোনো সংশয় নেই৷ ফলে গত নির্বাচনের তুলনায় কিছু কম ভোট পেলেও রাজ্যে আগামী জোট সরকারের নেতৃত্ব তাঁর হাতেই থাকছে৷ সম্ভবত সবুজ দলের সঙ্গে পরবর্তী সরকার গড়তে চলেছেন ভাইল৷ উল্লেখ্য, বার্লিনে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রত্যেকটি রাজ্য নির্বাচনে বাকি সব হিসেব গোলমাল করে মূখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তাই চূড়ান্ত ফলের উপর প্রভাব রেখেছে৷
কঠিন সময় এমন জয়ের স্বাদ পেয়ে শলৎসের দল কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলেও বার্লিনে তাঁর জোট সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে৷ কারণ সবুজ দলও রাজ্য নির্বাচনে ভালো ফল করলেও তৃতীয় শরিক উদারপন্থি এফডিপি দলের ভরাডুবি হয়েছে৷ এমনকি পাঁচ শতাংশের কম ভোট পাওয়ার কারণে রাজ্য বিধানসভায়ও প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে ফেডারেল অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারের দল৷ একের পর এক রাজ্য নির্বাচনে খারাপ ফলাফল এফডিপি দলকে রাজনৈতিক আঙিনায় কোণঠাসা করে দিচ্ছে৷ অথচ সবচেয়ে ছোট শরিক হওয়া সত্ত্বেও এফডিপি জোট সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের উপর মাত্রাতিরিক্ত প্রভাব রেখে চলেছে বলে বার বার অভিযোগ উঠছে৷ তবে সেই প্রভাব-প্রতিপত্তির ফায়দা তুলতে পারছে না এই দল৷ লিন্ডনার বলেন, জোট সরকারে দলের অংশগ্রহণ অনেক সমর্থককে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে৷
লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভরাডুবির মুখ দেখেছে সংসদের মূল বিরোধী শিবিরের সিডিইউ দল৷ ফেডারেল সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে ভোটারদের মন জয় করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে প্রাক্তন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল৷ সম্প্রতি দলের বর্তমান নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের নানা বিতর্কিত মন্তব্য ও অবস্থান সিডিইউ দলের গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দিচ্ছে বলে বেশিরভাগ বিশ্লেষক মনে করছেন৷
সংসদে প্রধান বিরোধী রক্ষণশীল শিবির প্রতিবাদী ভোটের ফায়দা তুলতে ব্যর্থ হলেও এ যাত্রায় সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল৷ গত কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনে তেমন ভালো ফল না করলেও লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে এক ধাক্কায় গতবারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ভোট পেয়েছে এই দল৷ অন্যদিকে খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশা তুলে ধরেও সমর্থনের তালিকার শেষে চলে গেছে বামপন্থি দল ‘ডি লিংকে'৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ/রয়টার্স)