দশ বছরে এক তৃতীয়াংশ দেশ ম্যালেরিয়ামুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা
১৯ অক্টোবর ২০১১বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও জানিয়েছে, ম্যালেরিয়ার প্রকোপে থাকা বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ দেশ আগামী ১০ বছরের মধ্যে মশাবাহিত এই রোগটি নির্মূলে করতে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে৷ রোল ব্যাক ম্যালেরিয়া - আরবিএম প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই আশাব্যঞ্জক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে৷ অ্যামেরিকার সিয়াটেলে আন্তর্জাতিক ম্যালেরিয়া ফোরামের সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনটি৷
এতে বলা হয়েছে, ১০৮ টি দেশের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশই এই রোগটি নির্মূলে সঠিক পন্থায় এগুচ্ছে৷ সম্মেলনে ডাব্লিউএইচও'র বিশ্ব ম্যালেরিয়া কর্মসূচি'র পরিচালক রবার্ট নিউম্যান বলেন, ‘‘উন্নততর রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া এবং ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণের ফলে এক্ষেত্রে অগ্রগতির একটি স্পষ্ট ছবি পাওয়া গেছে৷ আমরা যদি এটা ধরে রাখতে পারি, তাহলে আমরা বর্তমানের এই কর্মকৌশল দিয়েই অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচাতে পারবো৷''
ডাব্লিউএইচও'র পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ অর্থাৎ ৩.৩ বিলিয়ন মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে৷ ২০০৯ সালে এই রোগে প্রাণ হারিয়েছে সাত লাখ একাশি হাজার মানুষ৷ এদের মধ্যে অধিকাংশই আফ্রিকা মহাদেশের বলে সূত্রটি বলছে৷ ম্যালেরিয়া নির্মূলে প্রথম বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল ১৯৫৫ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত৷ ঐ কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর ২০টি দেশকে ম্যালেরিয়ামুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল ডাব্লিউএইচও৷ কিন্তু পরে সেই উদ্যোগে ঢিলেমির কারণে পরবর্তী ৩০ বছরে ম্যালেরিয়ামুক্ত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয় মাত্র চারটি দেশ৷
তবে সোমবারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি সাতটি দেশ ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে৷ আরো দশটি দেশ ম্যালেরিয়ার প্রকোপ শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে৷ এছাড়া অপর নয়টি দেশ সারা দেশজুড়ে ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ আরবিএম-এর অপর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধী ওষুধের সহজলভ্যতা, অধিকতর সঠিক রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া, মশারির ব্যবহার এবং মশা নিধনে স্প্রে'র ব্যবহারের ফলে গত দশ বছরে আফ্রিকায় প্রায় ১১ লক্ষ মানুষের প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে৷ এছাড়া বিশ্ব জুড়ে ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচিতে অর্থায়নের পরিমাণও বেড়েছে বলে জানিয়েছে আরবিএম৷ ২০০৩ সালে এই খাতে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ ছিল৷ কিন্তু ২০১০ সালে এই খাতে বরাদ্দ করা হয় ১.৫ বিলিয়ন ডলার৷ যাহোক সবমিলিয়ে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ থেকে মানুষকে রক্ষায় অর্জিত অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ডাব্লিউএইচও৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক