অবশেষে মোদী সরকারকে মমতার অনুরোধ
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০কথায় বলে ‘বাঘে–গরুতে একঘাটে জল খাওয়া’৷ কে বাঘ, কে গরু, সেই মীমাংসায় না গিয়েও বলা যায়, ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকের পর একই খাওয়ার টেবিলের এপার-ওপার বসে দুপুরের খাওয়া সারলেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ এনআরসি, সিএএ ইস্যুতে যে দুজনের বিরোধ, বিতর্ক প্রায়শই জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়৷ এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক৷ দাপট নয়, সৌজন্য দেখিয়ে৷ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও ছিলেন শুক্রবারের এই মধ্যাহ্নভোজে৷ নবীন সেই আসরের ছবি টুইটও করলেন৷
কিন্তু মুখোমুখি হয়েও মমতা-অমিত শাহ কোনো বিতর্ক হয়নি এদিন৷ বস্তুত পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকের পর মমতা নিজেই জানালেন, বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন বা নয়া নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কোনো কথাই হয়নি৷ তবে দিল্লির চলতি পরিস্থিতি নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা অমিত শাহকে জানিয়েছেন তিনি৷ অনুরোধ করেছেন, ধর্মীয় পরিচয় না দেখে যেন মানুষের জান-মালের হেফাজত করে সরকার৷ তবে মূল বৈঠকে আলোচনা হয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির পরিকাঠামোর উন্নতি, কয়লার রাজস্ব ভাগ, ইত্যাদি বিষয়ে৷
মমতা-অমিত শাহ বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বামপন্থিরা৷ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী মন্তব্য করেছেন, ‘‘সিএএ চালু করেই প্রধানমন্ত্রী মোদী আর কোথাও না গিয়ে এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়৷ এবার অমিত শাহ এলেন৷ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্রের নেতারা কাকে ভরসা করেন৷’’ আর পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘মমতা ব্যানার্জি ভুবনেশ্বর গিয়েছিলেন দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারির দায়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের বাঁচাতে৷ কিন্তু তাতে কোনো লাভ হবে না৷’’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন বৈঠকের পরই ভুবনেশ্বরে সিএএ-এর সমর্থনে একটি সভা করেন৷ সেখানে তিনি ফের বলেন, সিএএ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আইন নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন৷ তিনি বলেন, মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে ‘মমতাদিদি’ এবং অন্যান্য বিরোধী নেতারা৷