দীর্ঘ হচ্ছে গুমের তালিকা
কল্পনা চাকমার কথা মনে আছে? সেই ১৯৯৬ সাল থেকে নিখোঁজ৷ এর পর থেকে ক্রমশ লম্বা হচ্ছে এ তালিকা৷ আর এতো দীর্ঘ যে, আক্রান্ত পরিবারেরা ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠনও করেছে৷
১৪ বছরে ৬০০’রও বেশি
বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে আসক জানিয়েছে, ২০০৭ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোট ৬১৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। এঁদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ৯৪ জনকে। ফেরত এসেছেন ৫৭ জন। অন্যদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যমসূত্রে জানা যায়নি।
ঘটছে প্রতি বছরই
আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট নিখোঁজের সংখ্যা ৩৪৪ জন৷ এর মধে, ২০১৩ সালে ৩৩ জন, ২০১৪ সালে ৮৮ জন, ২০১৫ সালে ৫৫ জন, ২০১৬ সালে ৯৭ জন, ২০১৭ সালে ৬০ জন, এবং ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত মোট ১০ জন নিখোঁজ হয়৷
নিখোঁজের তালিকায় সাংবাদিকও
গত কয়েকবছরে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে৷ সর্বশেষ মোহনা টেলিভিশনের সাংবাদিক মুশফিকুর রহমান গত ৩ আগস্ট নিখাঁজ হন৷ তবে কিছুদিন পর ফিরে আসেন তিনি৷
কারা শিকার?
আন্তর্জাতিক ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস তাদের বিবৃতিতে বলছে গুম হওয়া ব্যাক্তিদের অধিকাংশই সরকার বিরোধি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিল৷ তবে গুম হয়ে যারা ফিরে এসেছেন, তাঁরাও গুম হওয়ার বিষয়ে নীরবতা পালন করছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি৷
কি বলছে সরকার?
বিভিন্ন সময়ে গুমের/নিখোঁজের বিষয়টি অস্বীকার করে আসলেও, চলতি মাসে জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইন্সট টর্চারের ৬৭তম সভায় বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে তোপের মুখে পড়ে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক৷ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বারবার বলপূর্বক অন্তর্ধান বা গুমের ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের আইন কাঠামোতে ‘গুম’ বা ‘ইনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ বলে কোনো টার্ম নেই।
আরআর/কেএম (আইন ও সালিশ কেন্দ্র, আন্তর্জাতিক ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, ঢাকা ট্রিবিউন)