1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুই বীরাঙ্গনার দুঃখের কাহিনি

২৮ জুন ২০১১

বীরাঙ্গনা, মানে সাহসী নারী৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ষিত হওয়া নারীদের এই খেতাব দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷ কিন্তু সামাজিকভাবে হয়রানি হওয়ার ভয়ে অনেকেই এটা ব্যবহার করতে চান না৷ এর পরিবর্তে বীরাঙ্গনারা চান মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি৷

https://p.dw.com/p/11kj4
সিরাজগঞ্জের রাহেলা বেগম এমনই এক বীরাঙ্গনাছবি: Shafina lohani

আলেয়া বেগম৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স ছিল মাত্র ১৩৷ কিন্তু তিনিও রেহাই পাননি পাক সেনাদের হাত থেকে৷ প্রায় সাত মাস, প্রতিদিন, কয়েকবার করে ধর্ষিত হয়েছেন তিনি৷

শুধু ধর্ষণ নয়, সিগারেট দিয়ে তাঁদের মুখ সহ সারা শরীরে ছেঁকা দেয়া হতো৷ আর খাবার হিসেবে দেয়া হতো শুধু শুকনো রুটি৷ মাঝেমধ্যে সবজি৷ ফলে অনেক মেয়ের শরীর সাঙ্ঘাতিক খারাপ হয়ে যেত৷ যখন পাক সেনারা দেখতো কোনো মেয়েকে দিয়ে আর হচ্ছে না তখন তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলা হতো৷ যেমনটা করা হয়েছিল আলেয়ার ক্ষেত্রেও৷ কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান৷

আলেয়ার দুঃখ, যুদ্ধের পর সমাজ তো তাঁদের মেনেই নেয়নি, উল্টো খারাপ কথা শুনতে হয়েছে তাঁদের৷

পরবর্তীতে নিজের তিক্ততম অভিজ্ঞতা লুকিয়ে বিয়ে করেন আলেয়া৷ কিন্তু কয়েক বছর আগে স্বামী সেটা জেনে তাঁকে মারধর করে এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চায়৷ তবে মেয়ে বাধা দেয়ায় সেটা আর সম্ভব হয়নি৷

ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আলেয়া বলেন, ‘‘আমি অনেক কষ্টে আছি৷ কেউ আমাদের খবর নেয়না৷ এই কথা কারও কাছে বলতে ভাল লাগেনা৷''

আলেয়ার বোন লাইলিও একজন বীরাঙ্গনা৷ পাক সেনারা যখন তাঁকে ধরে নিয়ে যায় তখন তিনি সন্তানসম্ভবা৷ কিন্তু পরে সেই সন্তান মারা যায়৷ পরবর্তীতে লাইলি পাক সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন৷ কিন্তু বিনিময়ে তিনি কী পেয়েছেন? জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘‘মানুষের লাঞ্ছনা, ঘৃণা, অপবাদ আর ঘাড় ধাক্কা৷''

আলেয়ার মেয়ে আসমা আক্তার একার বয়স এখন ১৫৷ সে তার মা ও খালার কাহিনি নিয়ে একটি গান বেঁধেছে৷ যেখানে ফুটে উঠেছে না পাওয়ার সেই বেদনা৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক