দুর্নীতি দমন আইন প্রণয়নের দাবিতে আমরণ অনশন
৫ এপ্রিল ২০১১জনজীবনে দুর্নীতি রোধে সরকার যাতে জন-লোকপাল বিলের মতো আইন প্রণয়ন করেন, যেখানে সুশীল সমাজের ভূমিকা থাকবে, এই দাবিতে বিশিষ্ট সমাজসেবী আন্না হাজারে সংসদভবনের অদূরে আমরণ অনশনে বসেছেন৷ তাঁর অভিযোগ, সরকার যে লোকপাল বিলের কথা বলছে, তা'তে সুশীল সমাজের কোন ভূমিকা নেই৷ তাই তার বিকল্প হিসেবে সুশীল সমাজের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বরা তৈরি করেছেন জন-লোকপাল বিলের খসড়া - যেখানে সরকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিত্ব থাকবে সমান সমান৷ আন্না হাজারে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, লোকপাল বিলের খসড়া তৈরির জন্য যৌথ কমিটি গঠনের দাবি সরকার না মানা অবধি তাঁর আমরণ অনশন চলবে৷ তিনি জানতে চান নাগরিকদের ভূমিকা কেন উপেক্ষা করবে সরকার ?
সরকারের লোকপাল বিলের অনেক ত্রুটিবিচ্যুতি দূর করার কথাও বলা হয়েছে জন-লোকপাল বিলে৷ যেমন সরকারের লোকপাল বিলে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে তদন্ত করা যাবে না৷ লোকপালের সুপারিশ গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয়৷ দোষী প্রমাণিত হলে ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৭ বছর জেল হতে পারে৷ সেখানে জন-লোকপাল বিলে শাস্তির সংস্থান পাঁচ বছর থেকে যাবজ্জীবন৷ লোকপাল বিলের সংস্থান অনুযায়ী রাজ্যগুলির জন্য থাকবে লোকায়ুক্ত এবং কেন্দ্রের জন্য লোকপাল৷ সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে এই সংস্থা যে-কোন মন্ত্রী, সাংসদ, আমলা এমন কী বিচারপতিদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারবে৷ আন্না হাজারের অভিযোগ, সরকার গত ৪০ বছরে আটবার লোকপাল বিল এনেও সংসদে পাশ করায়নি৷ রয়ে গেছে হিমঘরে৷
মনমোহন সিং সরকার যেভাবে একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জেরবার, তাতে আন্না হাজারের আন্দোলন গণআন্দোলনের চেহারা নিতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন৷
পাশাপাশি, সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় উপদেষ্টা কমিটিও দুর্নীতি দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের পক্ষপাতি৷ কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, ভারত এক মুক্ত গণতান্ত্রিক দেশ, কেউ যদি অনশন করতে চান তাহলে বাধা দেয়া যায় না৷ তবে সরকার সব মতের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য রাখার পক্ষপাতি৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী